ভারতের মহাকাশ অভিযানে যুক্ত হলো আরও এক সাফল্যের অধ্যায়। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা স্পেস সেন্টার থেকে রবিবার বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO)-র তৈরি নতুন কৃত্রিম উপগ্রহ ‘সিএমএস-০৩’ (CMS-03)।
ভারতের নিজস্ব তৈরি ভারী রকেট এলভিএম৩-এম৫ (LVM3-M5) এই ৪,৪১০ কেজি ওজনের উপগ্রহটিকে মহাকাশে নিয়ে গেল। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, উপগ্রহটিকে জিওসিনক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিট (GTO)-তে প্রতিস্থাপন করা হবে।
ইসরোর বিজ্ঞানীরা আদর করে এই এলভিএম৩ রকেটকে নাম দিয়েছেন ‘বাহুবলী’, কারণ এটি একাধিক ভারী উপগ্রহ বহনে সক্ষম।
এই রকেটটির উচ্চতা প্রায় ৪৩.৫ মিটার, এবং এটি ৪,০০০ কেজিরও বেশি ওজনের কৃত্রিম উপগ্রহকে কম খরচে জিটিও কক্ষপথে স্থাপন করতে পারে।
এটি এলভিএম৩ সিরিজের পঞ্চম সংস্করণ, এবং ভারতের মাটি থেকে উৎক্ষেপিত সবচেয়ে ভারী উপগ্রহবাহী মিশন।
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, ‘সিএমএস-০৩’ মূলত বহুমাত্রিক যোগাযোগ স্যাটেলাইট, যা ভারতীয় ভূখণ্ড এবং ভারত মহাসাগরীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চলে টেলিকমিউনিকেশন পরিষেবা দেবে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই উপগ্রহের অন্যতম উদ্দেশ্য সামরিক যোগাযোগ ও নজরদারি শক্তি বৃদ্ধি করা। যদিও ইসরো আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কিছু বলেনি।
ইসরো এর আগে ২০১৮ সালে ৫,৮৫৪ কেজি ওজনের জিস্যাট-১১ (GSAT-11) মহাকাশে পাঠিয়েছিল। তবে সেটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ফরাসি ভূখণ্ড ফ্রেঞ্চ গায়ানার কোউরু থেকে, ফরাসি সংস্থা এরিয়ানস্পেস (Arianespace)-এর সহায়তায়।
কিন্তু এবার ৪,৪১০ কেজি ওজনের উপগ্রহটিকে ভারতের নিজস্ব মাটি ও নিজস্ব রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে — যা ভারতের মহাকাশ গবেষণার আত্মনির্ভরতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতীক।
ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “সিএমএস-০৩ ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা করবে। এটি শুধু প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রতীক নয়, বরং ভারতীয় মহাকাশযাত্রার স্বনির্ভর শক্তির প্রতিচ্ছবি।”