কিস্তিতে মমতার প্রসঙ্গ আসাটা স্বাভাবিক,ব্যাখ্যা অজন্তার, অনিলকন্যাকে শোকজ করল সিপিএম

ডেস্ক: তৃণমূল মুখপত্রে ধারাবাহিক কলাম লেখায় অনিল-কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে এ বার শো-কজ করার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। তার শেষ কিস্তিতে রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর ভূয়সী প্রশংসা। পার্টির সদস্য হয়েও বিরোধী মুখপত্রে লেখার জন্য তাঁকে শো-কজের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, আলিমুদ্দিন মনে করছে, অজন্তা ‘জাগোবাংলা’য় লেখা প্রকাশ করায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে শো-কজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের অধ্যাপক এবং গবেষকদের ইউনিট।
 

যদিও লেখিকার দাবি, দলমত নির্বিশেষে বাংলার রাজনীতিতে মহিলাদের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। অজন্তার কাছে এখনও শো-কজের চিঠি গিয়ে পৌঁছয়নি।


তৃণমূলের (TMC) মুখপত্রের জন্য কলম ধরেছেন একসময়ের দাপুটে বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অধ্যাপক অজন্তা বিশ্বাস। লেখার প্রথম কিস্তি প্রকাশের দিন থেকেই চর্চায় রয়েছেন তিনি। তবে সকলের নজর ছিল ‘বঙ্গরাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক উত্তর সম্পাদকীয়তে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কী লেখেন অনিলকন্যা? অবশেষে শনিবার শেষ কিস্তি লিখলেন তিনি। আর সেখানে তৃণমূলনেত্রীর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অজন্তা। 


চারটি কিস্তিতে প্রকাশিত এই লেখার শেষ পর্বে কী প্রকাশ পায় সেদিকেই নজর আটকে ছিল রাজনৈতিক মহলের। শনিবার প্রকাশিত শেষ পর্বে বঙ্গ রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসার ছোঁয়া তো ছিলই, পাশাপাশি সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়েও বেশ কিছু শব্দ অজন্তা খরচ করেন। ওই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জননেত্রী বলেই বর্ণনা করেছেন প্রয়াত বাম নেতা অনিল কন্যা। আর এই শেষ কিস্তি প্রকাশ পাওয়ার পরই পাকাপাকিভাবে শো-কজের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বাম নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: বাবুলের ‘চললাম আলবিদা’-র বিষয়ে কিছুই জানেন না, দাবি করলেন দিলীপ


দলমত নির্বিশেষে বঙ্গ রাজনীতিতে সকল মহিলাদের কথা তুলে ধরাই আমার প্রয়াস বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন অজন্তা। তাঁর ব্যাখ্যা,’এই প্রবন্ধে কংগ্রেস নেত্রীদের সঙ্গে বামপন্থী নেত্রীদের অবদানের প্রসঙ্গও রয়েছে। বঙ্গের রাজনীতিতে নারীদের নিয়ে লিখতে গেল মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ আসাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তিনি বাংলার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মহিলা নেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষ প্রধান রাজনীতির অসম লড়াইয়ে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন।’
তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “ইতিহাসের শিক্ষার্থী হিসাবে আমার গবেষণার বিষয় হল বঙ্গ নারী। বেশ কিছুদিন ধরে আমি এ বিষয়ে গবেষণা করে আসছি। এমনই একটি লেখা হল প্রাক-স্বাধীনতা পর্বে অবিভক্ত বাংলা এবং পশ্চিম বাংলার রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ।’’


প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা পার্টি সদস্য। তিনি দলীয় অনুশাসন ভেঙেছেন বলে অভিমত সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদারের। তাঁর কথায়,’আমাদের ফোনে ও প্রাথমিকভাবে বলে জাগো বাংলায় ছাপার জন্য নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে লেখা নিয়েছে।  এটা কি ভুল কাজ হয়েছে? আমি শুনেই বলি, আমাদের পার্টি সদস্য হিসেবে এটা করতে পারো না। জাগো বাংলা বিরোধী পার্টির রাজনৈতিক মুখপত্র। পরের কিস্তি যাতে না বেরোয় সেই ব্যবস্থা করো। কিন্তু আগ্রহ দেখায়নি। পার্টি সদস্য হিসেবে কমরেডদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। 
এদিনই বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য মন্তব্য করেছেন, “দলের উর্ধ্বে কেউ নন। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার শাস্তি পেতে হয়ই।”

Related posts

পুজোয় নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস

ফাইনালের আগে সুপার ওভার থ্রিলারে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রিয়েলিটি চেক পেল ভারত, চিন্তা বোলিং নিয়ে

পুজোর ভিড় সামলাতে শিয়ালদহে বিশেষ ব্যবস্থা, চালু হচ্ছে ৩১টি স্পেশাল ট্রেন