মাটিতে তলিয়ে যাচ্ছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ। ঘরবাড়ি এবং জীবিকা হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বাসিন্দারা। অনিয়ন্ত্রিত ঘরবাড়ি-হোটেল অথবা বাঁধ নির্মাণ, বন নিধন, বনে আগুন এবং কোটি কোটি টাকার রাস্তা প্রকল্পের কারণে বিঘ্নিত পর্বতশ্রেণির বাস্তুতন্ত্র। কয়েক দশক ধরেই এ ব্যাপারে সতর্ক করে আসছেন পরিবেশবিদ এবং কর্মীরা। ঝুঁকিগুলিকে আগেই চিহ্নিত করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু লা-পরোয়া মনোভাব আজ জোশীমঠকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এক অপ্রতিরোধ্য সংকটের সামনে।
ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী, ৬ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় অবস্থিত, জোশীমঠ হল একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। তবে বেশ কয়েকটি মনোরম শহর এবং গ্রাম রয়েছে এখানে। বদ্রীনাথ এবং হেমকুণ্ড সাহিবের মতো তীর্থস্থানগুলির প্রবেশদ্বার হিসেবেও পরিচিত। আন্তর্জাতিক স্কিইং স্পট (আউলি) এবং ভারতের কৌশলগত চৌকিগুলির অন্যতম এই এলাকা।
ঘন ঘন চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয়
পুরো অঞ্চলটি ইতিমধ্যেই ঘন ঘন চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং ভূমিধসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রমাণিত। ২০২১ সালে চামোলি জেলায় একটি হিমবাহের ধসের ফলে তুষারপাতের সূত্রপাত ঘটায় এবং বন্যার কবলে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয় রেনি গ্রামে। ওই ঘটনায় ২০০ জনেরও বেশি নিহত বা নিখোঁজ হয়। ২০১৩ সালে, কেদারনাথে একটি বিশাল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ৫ হাজারেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। এ বার জোশীমঠের ঘটনায় মহাসংকটের মুখে পড়েছে এখানকার মানুষ। প্রতিদিনই ফাটল বাড়ছে। সরকার প্রতিনিয়ত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
সংকটে আরও যে সব স্থান
ভূবিজ্ঞানীদের মতে, জোশীমঠের মতোই ঝুঁকির মুখোমুখি আরও বেশকিছু স্থান। যেগুলির মধ্যে অন্যতম তেহরি, মানা, দারাসু, গৌচর, পিথোরাগড়। এ ছাড়াও কয়েকজন কিছু বিশেষজ্ঞ সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, চম্পাওয়াত, উত্তরকাশী এবং কর্ণপ্রয়াগের কিছু অঞ্চলেও জোশীমঠের মতো ফাটল তৈরি হয়েছে।
অদৃশ্য ইসরোর রিপোর্ট!
সম্প্রতি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার একটি উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ্যে এনেছিল, সেখানেও ভূমিধসের ছাপ স্পষ্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি, অর্থাৎ মাত্র ১২ দিনে ওই শহরের ভূমিধসের হার হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। যা ৫.৪ সেমি। তবে রহস্যজনক ভাবে অদৃশ্য হয়ে গেছে ওই রিপোর্ট।