স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়ার ডাক্তারদের অবস্থান। ছবি: রাজীব বসু
কলকাতা: অবশেষে ৪২ দিন পর আংশিকভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার জেনারেল বডির বৈঠকের পর এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, শুক্রবারই ধরনা তুলে নেওয়া হবে। তবে আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হবে না এবং নিজেদের দাবিতে আন্দোলন জারি রাখবেন।
গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটনার পর থেকেই জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। তাঁদের অভিযোগ, নির্যাতিতার মৃত্যুর পর প্রশাসনের কার্যক্রমে ত্রুটি এবং দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
গত ১১ দিন ধরে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে তাঁরা ধর্নায় বসেছিলেন। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠক হয়। এরপরই কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসে।
বৃহস্পতিবার রাতে, ধর্নামঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয় যে, শুক্রবার থেকে আংশিকভাবে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হবে। ধর্নামঞ্চ সরানোর পর, বিকেল ৩টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত একটি মিছিলের করা হবে।
আন্দোলনকারী ডাক্তার দেবাশিস হালদার বলেন, “আমরা শুক্রবারের মিছিলের পরে নিজ নিজ কলেজে ফিরে গিয়ে বিভাগ ভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করব। যেখানে খুব জরুরি পরিষেবার প্রয়োজন, সেই জায়গাগুলিতে আমরা কাজ করব। তবে অন্যান্য জায়গায় আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে আমরা আবার পূর্ণ কর্মবিরতিতেও ফিরে আসতে পারি।”
শনিবার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি পরিষেবায় যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী ডাক্তাররা। যদিও তাঁরা জানান, তাঁদের মূল দাবি থেকে তাঁরা সরছেন না এবং দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলতে থাকবে।
জুনিয়র ডাক্তারদের এই সিদ্ধান্তে চিকিৎসা পরিষেবা কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা। তবে আন্দোলন অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি যে এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে না, তা স্পষ্ট।
আপাতত জরুরি পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্তে রোগীরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও, ভবিষ্যতে আন্দোলন ফের পূর্ণ মাত্রায় ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আন্দোলনকারী ডাক্তাররা জানিয়েছেন।