কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গিহানায় প্রাণ গেল পাটুলির বাসিন্দা বিতান অধিকারীর। মঙ্গলবার দুপুরে অনন্তনাগ জেলার বৈসরন উপত্যকায় ঘটে যাওয়া এই হামলায় অন্তত ২৫ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
৪০ বছর বয়সি বিতান কর্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় থাকতেন। বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত বিতান গত ৮ এপ্রিল স্ত্রী সোহিনী ও তিন বছরের পুত্র হৃদানকে নিয়ে কলকাতায় ফিরেছিলেন। ছুটি কাটাতে গত ১৬ এপ্রিল তাঁরা বেড়াতে গিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরে। আগামী বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফেরার কথা থাকলেও, তার আগেই এল মর্মান্তিক দুঃসংবাদ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকা দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ‘মিনি সুইৎজ়ারল্যান্ড’ নামে পরিচিত এই সবুজ উপত্যকাই এদিন রক্তাক্ত হয়ে উঠল জঙ্গিদের গুলিতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হামলাকারীরা পর্যটকদের নামধাম জিজ্ঞাসা করে একে একে গুলি চালায়।
বিতানের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার। বাবার কণ্ঠে কান্না চেপে রাখা যায়নি—“সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যেতে চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, বৌমাকে নিয়ে ঘুরে আয়। প্রতিদিন কথা হত… আজও হয়েছে। দুপুরেও কথা হয়েছে… তারপর কী হয়ে গেল!”
ঘটনার পর বিতানের স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “জম্মু-কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার পরিবারগুলির প্রতি আমার গভীর সমবেদনা। বিতান অধিকারীর দেহ কলকাতায় ফিরিয়ে আনার জন্য রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
বিতানের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে কিছুটা হলেও ভরসা পাচ্ছেন তাঁর পরিবার। তবে অকালে প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা যে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।