বৃষ্টির মধ্যেই দশমীর বিসর্জন, নির্বিঘ্ন করতে কড়া প্রস্তুতি প্রশাসন ও পুরসভার

বিজয়া দশমী বৃহস্পতিবার। মহানবমীর রাত থেকেই কলকাতায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির প্রভাব থাকলেও, মা দুর্গার বিদায়ের দিন প্রতিমা বিসর্জন নির্বিঘ্ন করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে পুরসভা ও প্রশাসন। বড় বারোয়ারি পুজোগুলির প্রতিমা যেখানে সাধারণত পরবর্তী দিনগুলিতে নিরঞ্জন করা হয়, সেখানে এ দিন থেকেই ঘাটে ভিড় জমেছে বাড়ির ও ছোট পুজোর বিসর্জন ঘিরে।

ঘাটে বিশেষ নজরদারি

দশমীর দুপুরে বাজে কদমতলা ঘাট পরিদর্শনে যান পুরসভার মেয়র-পরিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার। তিনি পুর ও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বিসর্জনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। দেবাশিস বলেন, “পুরসভা সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলও তৈরি রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও বিসর্জনে সমস্যা হবে না।”

  • বাগবাজার, বাজে কদমতলা, গোয়ালিয়র ও নিমতলা ঘাটে মোতায়েন বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
  • সাতটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে নজরমিনার (ওয়াচ টাওয়ার) তৈরি করে টানা নজরদারি।
  • প্রতিটি ঘাটে পুলিশ বাহিনী, নেতৃত্বে ডিসি, এসি ও ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক।
  • গঙ্গায় টহল দিচ্ছে রিভার ট্রাফিক পুলিশ, ব্যবহৃত হচ্ছে ড্রোন ও সিসি ক্যামেরা।
  • বিশেষ লঞ্চে ও রেসকিউ টিমে রাখা হয়েছে মোট ১১ জন ডুবুরি।

আবহাওয়ার আশঙ্কা সামলাতে অতিরিক্ত সতর্কতা

নবমীর দুপুরেই পুর কমিশনার ধবল জৈনের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে এক জন করে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দায়িত্বে থাকবেন। ঘাটে অ্যাম্বুল্যান্স, আলো, জরুরি পরিষেবার পাশাপাশি নিয়মিত মাইক প্রচার চলছে দুর্ঘটনা এড়াতে। পুজো কমিটিগুলিকে জোয়ার-ভাটার তথ্য পাঠানো হচ্ছে এসএমএসে। চারটি ঘাটে রাখা হয়েছে বিশেষ বোট, যাতে প্রতিমা নামানোর পর কাঠামো দ্রুত সরানো যায়।

শোভাযাত্রায় কঠোর নিয়ম

  • বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ।
  • নিয়ম ভাঙলে আইনি ব্যবস্থা ও আয়োজকদের গ্রেফতারের সতর্কবার্তা।
  • শহরের ২৩৮টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।

গঙ্গাদূষণ রোধে উদ্যোগ

নমামি গঙ্গে প্রকল্প’-এর আওতায় প্রতিটি ঘাটে বাঁশের অস্থায়ী খাঁচা বসানো হয়েছে, যাতে প্রতিমার কাঠামো ও ফুল, বেলপাতা, ধূপ, প্রসাদ আলাদা সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া, ঘাটে ডাস্টবিন বসানো হয়েছে এবং সাফাইকর্মী মোতায়েন রয়েছে।

কলকাতা ও শহরতলিতে এ বছর প্রায় সাড়ে তিন হাজার দুর্গাপুজোর আয়োজন হয়েছিল। মা দুর্গার বিদায়ের দিনে আবহাওয়ার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, প্রশাসন ও পুরসভার বিশেষ উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন সম্পন্ন করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Related posts

‘শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন, রাজনীতি ভুলে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান’, নাগরাকাটা হামলার পর বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা! নাগরাকাটায় বিক্ষোভের মুখে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ

‘ম্যান মেড বন্যা’র দায় ভুটান-ডিভিসির, দার্জিলিঙের মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ও চাকরি ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর