একদিকে কলকাতা মেট্রো রেলের নতুন লাইন উদ্বোধনের ধুমধাম, অন্যদিকে পুরনো রুটে প্রতিদিন নিত্যযাত্রীদের নাভিশ্বাস। বৃহস্পতিবার সকালেও ফের সমস্যায় পড়লেন ব্লু লাইনের (দক্ষিণেশ্বর–শহিদ ক্ষুদিরাম) যাত্রীরা। টালিগঞ্জ (মহানায়ক উত্তম কুমার) থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম (ব্রিজি) পর্যন্ত স্বাভাবিক পরিষেবা না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসলেন অনেকেই।
সকাল ১০টার কিছু আগে থেকে একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন— শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত ট্রেন মিলছে না, মিললেও দেরিতে। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিষেবা স্বাভাবিকই আছে। এই দ্বৈত অবস্থান যাত্রীদের বিভ্রান্তি আরও বাড়াচ্ছে।
আসলে সমস্যা অনেক গভীরে। কবি সুভাষ স্টেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ, ফলে প্রান্তিক স্টেশন এখন শহিদ ক্ষুদিরাম। কিন্তু সেখানকার লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে বেশ কিছু মেট্রোকে টালিগঞ্জ থেকেই ঘুরিয়ে দিতে হচ্ছে। আপ ও ডাউনে লাইন পরিবর্তনের ব্যবস্থা না থাকায়, শহিদ ক্ষুদিরামে পৌঁছানো ট্রেনই আবার দক্ষিণেশ্বরমুখী হয়ে যাচ্ছে। এতে একই লাইনে একাধিক ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে, তৈরি হয় জট। ফলত অনেক পরিষেবাই টালিগঞ্জেই থেমে যাচ্ছে।
সমস্যার মূল পয়েন্ট:
- নিত্যযাত্রীরা শহিদ ক্ষুদিরাম, নাকতলা, গড়িয়া বাজার, বাঁশদ্রোণী থেকে ট্রেন পাচ্ছেন না নিয়মিত।
- পরিষেবার কোনও নির্দিষ্ট সূচি প্রকাশ পায়নি, যাত্রীরা দিশেহারা।
- অভিযোগের পাহাড়— ভোর থেকে অফিস টাইমে ভোগান্তি তুঙ্গে।
একইসঙ্গে সমালোচনার সুর উঠেছে— যখন একদিকে নতুন লাইন উদ্বোধনকে ঘিরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উৎসব চলছে, তখন বহু বছর ধরে চালু থাকা ব্লু লাইনের নিত্যযাত্রীরা প্রতিদিন সমস্যায় পড়ছেন। ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো উদ্বোধনের পর ব্লু লাইনের গুরুত্ব আরও বেড়েছে, কারণ হাওড়া বা শিয়ালদহের সঙ্গে শহরতলির স্টেশনগুলিকে দ্রুত সংযুক্ত করছে এই লাইন। অথচ সেই লাইনের যাত্রীদের আজও জুটছে না স্বস্তি।
যাত্রীদের প্রশ্ন— “নতুন লাইন চালুর ঢাকঢোল পেটানোয় ব্যস্ত কর্তৃপক্ষ, কিন্তু পুরনো রুটের সমস্যার সমাধান কবে?”