পৃথক রাজ্যের দাবিতে লাদাখে বিক্ষোভ, কেন্দ্রের কাঠগড়ায় সোনম ওয়াংচুক; উঠছে মণিপুর প্রসঙ্গও

লাদাখের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা-সহ একাধিক দাবিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার লেহতে ‘গণবিক্ষোভ’-এর ডাক দেয় লেহ অ্যাপেক্স বডি (LAB)-র যুব শাখা। সেই আন্দোলন দ্রুত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ, গাড়িতে আগুন, সরকারি দপ্তরে ভাঙচুর—এই অশান্তিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪ জনের, আহত হয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি। প্রশাসন ইতিমধ্যেই লেহ শহরে কারফিউ জারি করেছে। পাঁচ জনের বেশি সমাবেশ, মিছিল বা পদযাত্রায় কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছে জলবায়ু আন্দোলনকর্মী ও ম্যাগসাইসাই জয়ী সোনম ওয়াংচুককে। মন্ত্রকের দাবি, বহু অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি অনশন ভাঙেননি, বরং আরব বসন্ত ও নেপালের ‘জেন জি’ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে উত্তেজনা বাড়িয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ভাষায়, তাঁর ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্যেই জনতা অনশনস্থল ছেড়ে হিংসাত্মক পথে হাঁটতে শুরু করে। পাশাপাশি, স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলার ফুন্টসগ স্ট্যানজিন সেপাগের নামও উঠে এসেছে বিক্ষোভে সক্রিয় অংশগ্রহণের অভিযোগে।

অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে লাদাখবাসীর দাবি নিয়ে সরব থাকা সোনম ওয়াংচুক ভিডিওবার্তায় জানান, “আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে লেহতে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অনেক অফিস এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে।”

লাদাখবাসীর মূল দাবি—পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল কার্যকর, পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং দুটি লোকসভা কেন্দ্র। সোনমের মতে, লাদাখ সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত অঞ্চলের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দীর্ঘ আলোচনার পরও সমাধানসূত্র না মেলায় তিনি দু’সপ্তাহ আগে অনশনে বসেন।

এই পরিস্থিতি দেখে রাজনৈতিক মহলে ফের উত্থাপিত হচ্ছে মণিপুর প্রসঙ্গ। সেখানকার দীর্ঘদিনের অশান্তি, প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং দাঙ্গা-সহিংসতার রেশ এখনও কাটেনি। এবার লাদাখে একইভাবে দাবিদাওয়া ঘিরে রক্তপাত শুরু হওয়ায় বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে—কেন এতদিন ধরে আন্দোলনকারীদের কথা শোনেনি কেন্দ্র? মণিপুরের মতো লাদাখকেও কি অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে?

বিরোধী দলের দাবি, মণিপুরে যেমন দেরিতে পদক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, লাদাখেও তেমন ইতিহাস যেন না তৈরি হয়। সরকারী শিবির অবশ্য বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Related posts

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মেনে অবশেষে ক্ষতিপূরণ দিল সিইএসসি ! মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা সাহায্যের ঘোষণা

দেশের ৬ মেট্রো শহরের মধ্যে কলকাতায় সবচেয়ে কম পথদুর্ঘটনা, তথ্য কলকাতা পুলিশের রিপোর্টে

চেতলা অগ্রণীর পুজোয় অগ্নিকাণ্ড, বন্ধ দর্শনার্থীদের প্রবেশ