আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেলেন সাহিত্যিক গীতাঞ্জলি শ্রী ৷ তাঁর হিন্দি উপন্যাস ‘Tomb of Sand’ -অর্থাৎ টম্ব অফ স্যান্ডের জন্য তিনি এই পুরস্কারে সম্মানিত হলেন৷ এই প্রথম কোনও ভারতীয় ভাষায় লেখা সাহিত্য কীর্তির জন্য বুকার সম্মান পেলেন গীতাঞ্জলি শ্রী (Geetanjali Shree)৷ এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ৮০ বছরের এক নারী। প্রাথমিকভাবে উপন্যাসটি হিন্দিতে লেখা। পরে এটি ইংরেজিতে অনুবাদ হয়। এটি কোনও ভারতীয় ভাষায় লেখা প্রথম বই, যা এই পুরস্কার পেল। ৫০ হাজার পাউন্ড পুরস্কারমূল্যটি গীতাঞ্জলি শ্রী এবং ডেইজি রকওয়েলের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করা হবে।
গীতাঞ্জলী শ্রী এই পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেন, ‘আমি কখনও বুকারের স্বপ্ন দেখিনি। আমি কখনই ভাবিনি যে আমি পারব। কী বিশাল স্বীকৃতি, আমি বিস্মিত, আনন্দিত, সম্মানিত এবং বিনীত। পুরস্কার পাওয়ায় এক বিষণ্ণ তৃপ্তি আছে। ‘রেত সমাধি’ বা ‘টম্ব অফ স্যান্ড’ হল আমাদের বসবাসের জগতের জন্য একটি শোভা। একটি স্থায়ী শক্তি, যা আসন্ন ধ্বংসের মুখে আশাকে ধরে রাখে। বুকার অবশ্যই এটিকে অনেক বেশি লোকের কাছে নিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার এই বইয়ের নেপথ্যে হিন্দি সাহিত্যের যে সুগভীর, উঁচু সংস্কৃতি রয়েছে তা প্রমাণ হল৷ পাশাপশি দক্ষিণ এশিয়ার আরও ভাষাতেও এই সম্ভার রয়েছে৷ বিশ্ব সাহিত্য আরও সমৃদ্ধ হবে এই সব ভাষার এই কাজগুলি জানতে পারলে৷ এতে জীবনের শব্দকোষ আরও সমৃদ্ধ হয়৷’
‘টম্ব অফ স্যান্ড’ ১৩টি দীর্ঘ তালিকাভুক্ত উপন্যাসের মধ্যে ছিল, যা ১১ টি ভাষা থেকে ইংরাজিতে অনুবাদ করা হয়েছিল এবং চারটি মহাদেশের ১২ টি দেশ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। গীতাঞ্জলীকে পদকের সঙ্গে পুরস্কারের অর্থ হিসাবে তাঁর হাতে ৫০ হাজার পাউন্ড টাকা তুলে দেওয়া হয়, যা সমানভাবে ভাগ করা হবে লেখক ও অনুবাদকের মধ্যে।
৮০ বছরের এক বৃদ্ধার গল্প বলেছে ‘রেত সমাধি’ উপন্যাসটি। স্বামীর মৃত্যুর পর পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন সেই বৃদ্ধা। দেশভাগ দেখেছিলেন তিনি। সেই সময়ের ক্ষতগুলিই যেন ফের ছুঁয়ে দেখতে চান বৃদ্ধা। একজন মেয়ের ভূমিকায়, মায়ের ভূমিকায়, এক নারীর ভূমিকায়, কিংবা এক নারীবাদীর ভূমিকায় ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সেই সময়ের মূল্যায়ন করতে চাইছেন তিনি।