এসআইআর নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতির মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রায় প্রতিটি জনসভা থেকেই নিশানা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরের জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী তাঁর আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিলেন। শাহকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে মমতা বলেন, “এখানে একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন। তাঁর দু’চোখ ভয়ঙ্কর। দেখলে মনে হয় দুর্যোগের বার্তা। এমন কোনও কাজ নেই যে তিনি করতে পারেন না। তাঁর এক চোখে দুর্যোধন, আর অন্য চোখে দুঃশাসন।”
বুধবার সংসদে বক্তৃতা করতে গিয়ে অমিত শাহ তৃণমূল সাংসদদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন—“অনুপ্রবেশকারীদের পাশে দাঁড়ালে বাংলা থেকে আপনারা মুছে যাবেন।” তার পরদিনই মমতা সরাসরি পাল্টা জবাব দেন। তিনি ফের একবার দাবি করেন, “পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে না, ডিটেনশন ক্যাম্পও হবে না। নিশ্চিন্তে থাকুন।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলা থেকে কাউকে তাড়াতে দেব না। আর তাড়ালে তাঁদের কী ভাবে ফিরিয়ে আনতে হয় আমরা জানি।”
জনসভা থেকে মমতা নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য করে অভিযোগ তোলেন, অমিত শাহের নির্দেশেই এসআইআর-এর মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে নাগরিকদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁর দাবি, জেলাশাসকদের উপর চাপ সৃষ্টি করে দেড় কোটি মানুষের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বিহারের উদাহরণ টেনে মমতা বলেন, “বিহারে তোমরা পেরেছ, বাংলায় করতে দেব না।”
মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ—খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি হচ্ছে বিজেপির আইটি সেলের পরামর্শে। তিনি বলেন, “বিজেপির আইটি সেলের তৈরি করা ভোটার তালিকা দিয়ে ভোট করানোর পরিকল্পনা করছ তো? যা খুশি করো। কিচ্ছু করতে পারবে না।”
কৃষ্ণনগরের সভা থেকে ভোট ভাগের ‘ষড়যন্ত্র’ নিয়েও সতর্ক করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, “ভোট এলেই বিজেপি টাকা নিয়ে ভোট ভাগ করতে নামে। আপনারা কেউ ভোট ভাগ করতে দেবেন না।” রাজনৈতিক মহলের দাবি, মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে সাসপেন্ডেড তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাসকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গকেই লক্ষ্য করে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।