দিল্লির পরাজয় এড়ানো যেত! আপ-কংগ্রেসকে যে কারণে দুষলেন মমতা

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টি (আপ)-র বিপর্যয়ের পেছনে কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবকেই দায়ী করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক কংগ্রেস ও আপের মধ্যে সমন্বয়হীনতাই এই পরাজয়ের মূল কারণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, দিল্লিতে কংগ্রেসের ‘অনমনীয়’ মনোভাব এবং হরিয়ানায় আপের একক প্রচেষ্টা এই পরাজয় ডেকে এনেছে।

শনিবার দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর তৃণমূল নেত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও দলের অভ্যন্তরে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। সোমবার বিধানসভায় পরিষদীয় দলের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, দিল্লিতে বিজেপি মাত্র কয়েক শতাংশ ভোটে জিতেছে। কংগ্রেস যদি নমনীয় হয়ে আপের সঙ্গে জোট বেঁধে চলত, তাহলে এই পরাজয় এড়ানো যেত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, দিল্লিতে কংগ্রেসের মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পাওয়াটা খুবই খারাপ ফলাফল। এছাড়া, হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সেখানেও আপ ও কংগ্রেসের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। হরিয়ানায় ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৮টিতে বিজেপি জয়লাভ করেছে, আর কংগ্রেস পেয়েছে ৩৭টি আসন। আপ সেখানে কোনো আসনই জিততে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, হরিয়ানায় আপ যদি কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় করে চলত, তাহলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারত।

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, কংগ্রেস তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে আপ-এর ভোট কাটার মাধ্যমে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বড় ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়েছে। বিজেপি ঐতিহাসিক জয় পেতে চলেছে, আর এই ভোট ভাগাভাগি আপ-এর ক্ষতিকে আরও গভীর করেছে।

কংগ্রেস ও আপ আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের প্রভাব স্পষ্ট হয়েছে। আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেই তাঁর নয়াদিল্লি আসনে বিজেপির প্রার্থী প্রবেশ বর্মার কাছে পরাজিত হয়েছেন। কংগ্রেসের সন্দীপ দীক্ষিতও ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং তাঁর পাওয়া ভোট যোগ হলে কেজরিওয়াল সহজেই জিততে পারতেন। একইভাবে, আপের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া মাত্র ৬০০ ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছেন, যেখানে কংগ্রেস প্রার্থীর ভোট যোগ হলে ফলাফল উল্টো হতে পারত।

দিল্লির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আসন যেমন বাদলি, নাঙ্গলোই জাত, মাদিপুর, রোহিণী ও দ্বারকায়ও একই প্রবণতা দেখা গেছে। কংগ্রেস ও আপের জোট না করার সিদ্ধান্ত বিজেপিকে সুবিধা দিয়েছে এবং আপকে আরও দুর্বল করে তুলেছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Related posts

পুজোর ভিড় সামলাতে শিয়ালদহে বিশেষ ব্যবস্থা, চালু হচ্ছে ৩১টি স্পেশাল ট্রেন

‘যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, আজ তাঁরাই উদ্বোধন করছেন’— অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, মঞ্চ থেকেই বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক