এসআইআর প্রক্রিয়া শেষের পর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণা যে কোনও দিনই হতে পারে—এই সম্ভাবনার মাঝেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জনসভা জোরদার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই বনগাঁ, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে জনসভা সম্পন্ন করেছেন তিনি। এবার তাঁর পরবর্তী বড় সভা নদিয়ায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগে সেই জেলায় সভা করতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী। এই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সফরের আগে শনিবার কৃষ্ণনগরে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে জেলা সদরে পৌঁছালেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা।
আগামী ১১ ডিসেম্বর কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে জনসভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সেই মাঠ এদিন পরিদর্শন করেন এডিজি। মঞ্চ নির্মাণ, ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা, প্রবেশ ও প্রস্থান পথ, জরুরি পরিস্থিতির প্রস্তুতি—প্রত্যেকটি নিরাপত্তা দিক খতিয়ে দেখেন তিনি। পাশাপাশি জেলা পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, খুব শিগগিরই জেলা প্রশাসন ও পুলিশ এই সভাকে কেন্দ্র করে একটি যৌথ সমন্বয় বৈঠক করবে।
এসআইআরকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় উত্তেজনা ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর জনযোগ বাড়াতে শুরু করেছেন। বনগাঁর মতুয়াগড়ে প্রথম সভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন যে এসআইআর নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের পাশে আছে এবং প্রয়োজন হলে যে কোনও রকম সহায়তা দেওয়া হবে। একই বার্তা দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ ও মালদহের সভাগুলিতেও।
রাজনৈতিকভাবে নদিয়ার গুরুত্ব যথেষ্ট। জেলার বেশ কিছু বিধানসভা—বিশেষত কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট মহকুমার এলাকায়—মতুয়া জনগোষ্ঠীর প্রভাব উল্লেখযোগ্য। প্রতিবার ভোটে মতুয়ারা প্রভাব ফেলেন ফলাফলে। আসন্ন নির্বাচনী আবহে এসআইআর নিয়ে তৈরি হওয়া সংশয় ও উদ্বেগ দূর করতে নদিয়া থেকে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ প্রবল।
৯ ডিসেম্বরে কোচবিহারেও জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ঠিক দু’দিন পর নদিয়ায় বড় সভা। ফলে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ—দুই জেলাতেই রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এসআইআর নিয়ে বিজেপির অবস্থান এবং রাজ্যের পরিস্থিতি ঘিরে মমতার বক্তব্য কী হবে, এখন সেটিই নজরকাড়া ঘটনা হতে চলেছে।