কেন্দ্রের নয়া শ্রম কোড নিয়ে বিরোধ আরও তীব্র করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগেই জানিয়েছিল, নয়া শ্রম কোড রাজ্যে কার্যকর করা হবে না। এবার সেই শ্রম আইন–সংক্রান্ত প্রতিলিপি রাজ্যের কাছে পৌঁছতেই ১০০ দিনের কাজের টাকার জন্য যে নতুন শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তাকে “অসম্মানজনক” বলে আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারের জনসভা থেকে প্রতীকীভাবে সেই কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান তিনি।
দু’দিনের কোচবিহার সফরে গিয়ে সোমবার তৃণমূলনেত্রী স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেন। শ্রম কোড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিন-চার দিন আগে আমাদের কাছে একটি নোটিস এসেছে। কেন্দ্রের নতুন লেবার কোড নিয়ে ১০০ দিনের কাজের টাকার জন্য নতুন শর্ত চাপিয়েছে। আমরা এই শর্ত মানি না, মানবও না। এটা অসম্মানের। এই কাগজটা ছিঁড়ে ফেললাম। এটা কেন্দ্রের নোটিস নয়, আমার কাছে থাকা কাগজ।”
কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক শ্রম বিধি একত্রিত করে চারটি統 শ্রম কোড চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আলাদা রাজ্যে আলাদা বেতন কাঠামো, ভিন্ন কর্মঘণ্টা, নিরাপত্তা বিধি—এসব জটিলতা দূর করতেই নতুন আইন কার্যকর হয় গত নভেম্বর থেকে। তবে কোনও রাজ্য তা গ্রহণ করবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের হাতে। পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এই কোড রাজ্যে চালু হবে না। যদিও কিছু বেসরকারি সংস্থা নতুন নিয়মে কাজ শুরু করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজের এখনও ৫১,৬১৭ কোটি টাকা পাইনি। তোমাদের দয়ার দরকার নেই। আমরা বিকল্প প্রকল্প করতে জানি। আমরা আবার ক্ষমতায় এলে কর্মশ্রী প্রকল্পের আওতায় নিজেরাই ১০০ দিনের কাজ করাব।”
কোচবিহারের জনসভায় শ্রম কোডের কাগজ ছিঁড়ে মমতার এই প্রতিবাদ রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলেছে। কেন্দ্র–রাজ্য দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত।