তৃণমূলে শেষ কথা তিনিই, দলে অভিজ্ঞদের জায়গা দিয়ে প্রমাণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মাঝের একটা সময় মনে করা হচ্ছিল যে, তৃণমূল কংগ্রেস এর রাশ বুঝি এবার তৃণমূল নেত্রীর হাতে আর পুরোপুরি নেই। সেই রাশ অনেকটাই চলে গিয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর প্রশান্ত কিশোর জুটির হাতে, এমনটাই ভাবতে শুরু করেছিল সারা বাংলার রাজনৈতিক মহলের বৃহৎ অংশ। একই ভাবনা কাজ করছিল তৃণমূল কংগ্রেস এর একদম উপরমহল থেকে শুরু করে নিচু তলার কর্মীদের মধ্যেও।

খুব স্বাভাবিকভাবেই দলের মধ্যে ক্ষমতার ভর কেন্দ্রের এই পরিবর্তনের আভাস অনেকেরই পায়ের তলার শক্ত ভিতকে নড়িয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনায় উঠতি বা নব্য তৃণমূল এর একটা অংশ খুশি হলেও দলের প্রবীণরা কিংবা বেশিরভাগ সদস্য সমর্থকরা খুব একটা খুশি হতে পারছিলেন না। কারণ দলের কতৃত্ব দলের সর্বময় নেত্রীর হাতে থাকবে না, এটা কিছুতেই হজম করতে পারছিলেন না তৃণমূলের বৃহৎ অংশ।

এর উপরে আবার নতুন করে অনেকের কাছেই অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছিল দলের মধ্যে পিকের সংস্থা আইপ্যাক এর ভূমিকা। সরাসরি বা প্রকাশ্যে সেভাবে কেউ মুখ না খুললেও আড়ালে আবডালে অনেকেই তীব্র সমালোচনায় তুলোধোনা করতে শুরু করেছিলেন পিকেকে এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাক এর কাজ কর্মকে। বিশেষ করে আদি তৃণমূল নেতৃত্ব এই ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।

দলের অন্দরে এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আড়াআড়ি দুটি ভাগ যেন ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। যা অনেকটাই সামনে চলে আসে সদ্য কলকাতা পুরসভার নির্বাচনের সময়। এরপর সদ্য হয়ে যাওয়া রাজ্যের চার পুর নিগমের নির্বাচন কিংবা রাজ্যের ১০৮ পুরসভায় প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিড়ম্বনা।

ঠিক এই জায়গা থেকেই ফের একবার কঠোর হাতে দলের রাশ ধরলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া যাবতীয় বিভ্রান্তিকে এক ধাক্কায় হঠিয়ে দিয়ে সারা রাজ্য তথা দেশের সামনে প্রমাণ করলেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস মানে এখনও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন শেষ কথা।

একই সঙ্গে দলের যাবতীয় সংগঠন ভেঙে দিয়ে নতুন করে সংগঠনকে নিজের মতন করে শুয়ে তোলা কিংবা দলের মধ্যে প্রবীণ নেতাদের ফের একবার গুরুত্ব ও সম্মান এর সঙ্গে পুন প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে দলের ভারসাম্যকেও আগের মতো অনেকটাই স্বাভাবিক করে তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দলের সর্বশেষ বৈঠকে দলীয় সংগঠনের দায়িত্ব বণ্টন করতে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ছিল, ‘নতুনদের দরকার আছে। তবে ওল্ড ইজ গোল্ড।’ এরপর দায়িত্ব বণ্টনের দিক থেকেও তৃণমূলে পুরনো ও প্রবীণ নেতাদের সম্মান ও ‘মান্যতা’ দিয়ে মমতা তাঁর কতৃত্বকেই সাংগঠনিক ভাবে ফের একবার প্রতিষ্ঠিত করলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Related posts

পুজোয় নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস

ফাইনালের আগে সুপার ওভার থ্রিলারে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রিয়েলিটি চেক পেল ভারত, চিন্তা বোলিং নিয়ে

পুজোর ভিড় সামলাতে শিয়ালদহে বিশেষ ব্যবস্থা, চালু হচ্ছে ৩১টি স্পেশাল ট্রেন