কলকাতা: উত্তরবঙ্গ সফর শেষে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী ভবনে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। বিরসা মুন্ডার ১৫০-তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজ্যে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। রাজারহাটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন, বিরসা মুন্ডার ঐতিহাসিক অবদানকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিরসা মুন্ডা মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজের জীবন দিয়েছিলেন। তিনি আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, জঙ্গলের অধিকার শুধুমাত্র ট্রাইবালদের হাতে থাকা উচিত।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, তাঁর সরকারের উদ্যোগে ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্টের অধীনে প্রায় ৪৯ হাজার আদিবাসী মানুষকে ফরেস্ট পাট্টা এবং ৮৫১টি কমিউনিটি পাট্টা প্রদান করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।
- শিক্ষা: রাজ্যে ২১ লক্ষ ৬২ হাজার ছাত্রছাত্রীকে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে। সাঁওতালি ভাষার স্বীকৃতি এবং ঝাড়গ্রামে কবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় এবং নয়াগ্রামে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর নামে কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।
- পুষ্টি ও স্বাস্থ্য: আইসিডিএস সেন্টারের মাধ্যমে আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
- রেশন ও পরিচয়পত্র: বিনামূল্যে রেশন প্রদান এবং ১ কোটি ৬২ লক্ষ কাস্ট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে।
- আর্থিক সহায়তা: সেলফ হেল্প গ্রুপের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রতিভার বিশেষ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমার আদিবাসী ভাই-বোনেরা একদিন অলিম্পিকে সোনা এনে দেবে। এই গর্ব করার মতো দিন খুব কাছেই।”
আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ধামসা-মাদলকে তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সরকার প্রথম থেকেই উদ্যোগী। বিরসা মুন্ডার মতো নেতার আদর্শ আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে এবং মানুষকে সংগ্রামের অনুপ্রেরণা দেবে।