ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে কমিশনের নির্দেশে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর অভিযোগ, বিহারের বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা সংশোধনের যে সিদ্ধান্ত কমিশন নিয়েছে, তা আসলে বাংলাকে নিশানা করতেই। তিনি বলেন, বিহার বাহানা, আসল নিশানা বাংলা।
কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, নাগরিকত্বের নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র না থাকলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না। ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল না, তাঁদের জন্মস্থান সংক্রান্ত নথি দিতে হবে। ১৯৮৭ সালের আগে যাঁদের জন্ম, তাঁদেরও জন্মতারিখ ও জন্মস্থান প্রমাণ করতে হবে। ২০০৪ সালের পরে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের মা-বাবার পরিচয়পত্রও দিতে হবে।
এই নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, এটা কি এনআরসি চালু করার চেষ্টারই একটা অংশ? তিনি প্রশ্ন তোলেন, গরিব মানুষ কীভাবে এত নথি জোগাড় করবেন? তরুণদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে মমতা বলেন, বিহারে বিজেপি সরকারে রয়েছে, তাই সেখানে এই নিয়ম কড়া ভাবে প্রয়োগ হবে না। কিন্তু বাংলা ও পরিযায়ী শ্রমিকদের টার্গেট করতেই এই পদক্ষেপ। কমিশন বিজেপির কথায় চলছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
এছাড়া কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলির বুথ এজেন্টদের তথ্য চাওয়া নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেন তাঁকে দলের বুথ এজেন্টদের তথ্য দিতে হবে? কেন তাঁদের গোপনীয়তা ভাঙা হবে?
সবশেষে মমতা বলেন, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রবিরোধী। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে ভবিষ্যতে তৃণমূল দলগতভাবে প্রতিবাদ জানাবে এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে। তিনি কমিশনকে অনুরোধ করেন, নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে ভোটার তালিকা সংশোধন করা হোক, যাতে কোনও প্রকৃত ভোটার বাদ না পড়ে।