প্রথম পাতা খবর মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে যুবভারতী কাণ্ড: আয়োজক শতদ্রু দত্তের হুগলির বাড়িতে হানা পুলিশের, কালো টাকা খুঁজবে ইডি

মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে যুবভারতী কাণ্ড: আয়োজক শতদ্রু দত্তের হুগলির বাড়িতে হানা পুলিশের, কালো টাকা খুঁজবে ইডি

9 views
A+A-
Reset

লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠানে কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ভাঙচুরের ঘটনার তদন্তে এ বার অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তের হুগলির বাড়িতে হানা দিল পুলিশ। শুক্রবার সকালে রিষড়ায় শতদ্রুর বাড়িতে যায় বিধাননগর দক্ষিণ থানার একটি পুলিশ দল। পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বিলাসবহুল ওই তিনতলা বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে প্রথমে রিষড়া থানায় পৌঁছয় বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ দল। দলে এক মহিলা পুলিশকর্মী-সহ মোট পাঁচ জন পুলিশ আধিকারিক ছিলেন। রিষড়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় তাঁরা পরে রিষড়ার বাঙুর পার্ক এলাকায় অবস্থিত শতদ্রু দত্তের বাড়িতে যান। ঝাঁ-চকচকে ওই তিনতলা বাড়িতে সুইমিং পুল এবং ফুটবল খেলার মাঠ রয়েছে। তবে তল্লাশির সময় বাড়িতে পরিচারিকা ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তদন্তকারীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘরে ঘরে তল্লাশি চালান। যদিও এই তল্লাশিতে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় এক পুলিশ আধিকারিক জানান, গোটা বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, মেসির অনুষ্ঠানে ‘কালো টাকা’ ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। যুবভারতীকাণ্ডে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় ইতিমধ্যেই দু’টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি প্রায় ১০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে।

সূত্রের খবর, ওই বিপুল অঙ্কের টাকার উৎস খতিয়ে দেখতে নামতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। কত টিকিট ও পাস বিক্রি হয়েছে, মেসির সঙ্গে ছবি তোলার নামে কী ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে— সেই সব লেনদেনেরও কোনও সঠিক হিসাব রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই একটি ইসিআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং শীঘ্রই কেন্দ্রীয় সংস্থা গোটা ঘটনার তদন্তে নামতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর যুবভারতীতে মেসির অনুষ্ঠানে তাণ্ডবের পরেই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল শতদ্রু দত্তকে। আপাতত তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিজেকে ‘স্পোর্টস প্রোমোটার’ বা ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিত করা শতদ্রু অতীতে পেলে, দিয়েগো মারাদোনা এবং এমিলিয়ানো মার্তিনেসের মতো ফুটবল তারকাদের কলকাতায় এনেছিলেন। তবে মেসির অনুষ্ঠানে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগেনি। অনুষ্ঠান শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মাঠজুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের ধস্তাধস্তি, চেয়ার ভাঙচুর, বোতল ছোড়া— সব মিলিয়ে যুবভারতী স্টেডিয়াম কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এ দিকে, স্টেডিয়াম ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম ঋজু দাস, সৌম্যদীপ দাস এবং তন্ময় দে। শুক্রবার তাঁদের আদালতে হাজির করিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে। এই নিয়ে যুবভারতীকাণ্ডে মোট ন’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে আর্থিক অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতার একাধিক অভিযোগ।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.