মধ্যমগ্রামে পারিবারিক বিবাদের জেরে পিসিশাশুড়িকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে ধৃত মা ও মেয়ে। কলকাতার আহিরিটোলা ঘাটে ট্রলিবন্দি দেহ ফেলার চেষ্টার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে তারা। তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশি সূত্রে জানা গেছে, মৃতা সুমিতা ঘোষ (৫৫) পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটের বাসিন্দা হলেও সম্প্রতি থাকতেন শিয়ালদহে বোনের বাড়িতে। কয়েকদিন আগে তিনি মধ্যমগ্রামের বীরেশ পল্লিতে তার আত্মীয় ফাল্গুনী ঘোষ ও তার মা আরতি ঘোষের বাড়িতে যান। সম্পত্তি ও গয়না নিয়ে পারিবারিক বিবাদ চলছিল দু’পক্ষের মধ্যে। অভিযোগ, সেই বিবাদের জেরে সোমবার বিকেলে তীব্র ঝগড়ার পর ফাল্গুনী ইট দিয়ে সুমিতার মাথায় আঘাত করে খুন করেন।
তদন্তকারীদের দাবি, হত্যার পর দেহ লোপাটের জন্য পরিকল্পনা করে ফাল্গুনী ও তার মা। দেহ ট্রলিতে ভরার সময় দেখা যায়, তা পুরোপুরি ঢুকছে না। এরপর বঁটি ও কাটারি দিয়ে সুমিতার দুটি পা কেটে ট্রলিতে রাখা হয়। গন্ধ ঢাকতে রাসায়নিক স্প্রে করা হয় দেহে। মঙ্গলবার সকালে ট্রেনে করে ট্রলি শিয়ালদহে নিয়ে আসে তারা। পরে আহিরিটোলা ঘাটে দেহ ফেলার চেষ্টা করার সময় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ধৃতদের বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। ফাল্গুনী একবার বলছে খুন দুই দিন আগে হয়েছে, আবার কখনও বলছে অন্য সময়ের কথা। তদন্তকারীদের সন্দেহ, বিভ্রান্ত করতেই বারবার বয়ান বদল করছে অভিযুক্ত। ইতিমধ্যেই দমদম থেকে একটি ভাড়ার গাড়ি ট্রেস করা হয়েছে, যা ব্যবহার করে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল।
বর্তমানে মামলাটি মধ্যমগ্রাম থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অনুমান, সম্পত্তি ও গয়নার লোভেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযুক্ত মা-মেয়েকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার প্রকৃত কারণ বের করার চেষ্টা চলছে।