ট্যাংরায় একই পরিবারের ছয় সদস্যের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় নতুন তথ্য সামনে আনল পুলিশ। বুধবার সকালে ইএম বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার সূত্র ধরেই পুলিশ এই ঘটনার সন্ধান পায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিতে থাকা তিন যুবক প্রণয় দে, প্রসূন দে এবং আরেকজন আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে গাড়ি নিয়ে পিলারে ধাক্কা মারেন। এরপর তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—তাঁদের বাড়িতে তিন জনের দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ দ্রুত ট্যাংরার ওই বাড়িতে পৌঁছে দুই মহিলা ও এক কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধদমন) রুপেশ কুমার জানান, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন রোমি দে ও সুদেষ্ণা দে নামে দুই মহিলা এবং এক কিশোরী। হাসপাতালে ভর্তি থাকা তিন যুবক জানিয়েছেন, তাঁরা সবাই একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পায়েসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ার পর তাঁরা হাতের শিরা কাটেন। এরপর তিন যুবক গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে দুর্ঘটনা ঘটানোর মাধ্যমে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
তবে কেন একই পরিবারের ছয় জন এই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিলেন, তা এখনও রহস্যঘেরা। প্রাথমিক তদন্তে আর্থিক সমস্যার ইঙ্গিত মিলেছে, তবে সেই দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। স্থানীয় কাউন্সিলর জানিয়েছেন, এই পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় থাকতেন এবং তাঁদের চামড়ার ব্যবসা ছিল। কোনও আর্থিক সংকটের কথা তিনি আগে শোনেননি।
লালবাজার হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তদন্তে নেমেছে ডগ স্কোয়াডও। তিন জনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে, আত্মহত্যার পরিকল্পনা সবাই একসঙ্গে করেছিলেন নাকি তিন যুবক বাকিদের মৃত্যু দেখেই বেরিয়ে যান। সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে তদন্তের পরেই, জানিয়েছেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার।