হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে শুক্রবারই বাড়ি ফিরেছেন নচিকেতা চক্রবর্তী। কিন্তু সুস্থ হয়ে ফেরার আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই শিল্পীর কণ্ঠে ধরা পড়ল তীব্র অভিমান। বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর সোশাল মিডিয়ায় ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’ শীর্ষক একটি ভিডিওবার্তা শেয়ার করে কার্যত নেটদুনিয়ার একাংশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ‘আগুনপাখি’ খ্যাত শিল্পী।
ভিডিওবার্তায় নচিকেতাকে বলতে শোনা যায়,“এবার আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই কথা দিচ্ছি, মরে যাওয়ার চেষ্টা করব।”
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে যিনি জীবনমুখী গানে শ্রোতাদের অনুপ্রাণিত করে এসেছেন, তাঁর কণ্ঠে আচমকা এমন জীবনবিমুখ সুর ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
শিল্পী নিজেই জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় গত ১০ ডিসেম্বর রাতে এই উপলব্ধি তাঁর মনে আসে এবং সেই অভিমানই তিনি পরে শব্দে বন্দি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় সোশাল মিডিয়ায় একাংশ নেটব্যবহারকারী নচিকেতার মৃত্যু কামনা করেছিলেন বলেই অভিযোগ। সেই বিদ্বেষমূলক মন্তব্যই গভীরভাবে আঘাত করেছে শিল্পীকে।
ভিডিওবার্তায় নচিকেতা আরও বলেন, “আমাকে তো আমার যা আয়ু, তার থেকে বেশিবার মারা হয়ে গিয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। আবারও বেঁচে এলাম। হয়তো ভুল হয়ে গেছে। ক্ষমা করবেন। এবার আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই কথা দিচ্ছি, মরে যাওয়ার চেষ্টা করব। অন্তত আপনাদের মান রাখতে।”
শুধু তা-ই নয়, নিন্দুকদের উদ্দেশে কটাক্ষ করতেও পিছপা হননি তিনি। নচিকেতার কথায়,“আমি লিখছি যাতে লোকে পড়ে। ভালো লাগলে নিজের কাছে রাখবেন। আর ভালো না লাগলে ভুলে যান। কমেন্ট করবেন না। কারণ আমি কারও কমেন্টের আশায় লিখছি না।”
এর পর আরও তীব্র ভাষায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, অযথা মন্তব্য করার প্রবণতা আসলে এক ধরনের ‘ব্যাধি’, আর কমেন্ট করার আগে ভাবার অনুরোধও জানান শিল্পী।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বুকে ব্যথা নিয়ে কলকাতার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন নচিকেতা চক্রবর্তী। চিকিৎসকদের পরীক্ষায় জানা যায়, তাঁর হৃদযন্ত্রে ব্লকেজ রয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শনিবার দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সফল ভাবে হার্টে স্টেন্ট বসানো হয়। বর্তমানে বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন শিল্পী।
হাসপাতাল থেকে ফিরে নচিকেতার এই ভিডিওবার্তা নতুন করে সোশাল মিডিয়ায় নেটবিদ্বেষ, শিল্পীর মানসিক চাপ এবং দায়িত্বশীল আচরণের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।