অগ্নিগর্ভ নেপালে এবার প্রাণ গেল এক ভারতীয় মহিলার। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বাসিন্দা রাজেশ দেবী পশুপতিনাথ মন্দির দর্শন করতে কাঠমান্ডু গিয়েছিলেন। কিন্তু শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে ওঠার পরই বিপদ নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা হোটেলে আগুন ধরিয়ে দিলে পালাতে গিয়ে পাঁচতলা থেকে লাফ দেন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজেশ দেবী স্বামী রামবীর সিং গোলা-র সঙ্গে ৭ সেপ্টেম্বর নেপালে গিয়েছিলেন। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে জেন জি’র বিক্ষোভ হিংসাত্মক রূপ নেয়। অন্য হোটেলের মতো তাঁদের হোটেলেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে জানলা ভেঙে লাফ দিতে বাধ্য হন পর্যটকেরা। নিচে রাখা তোশকের উপরেই নামার চেষ্টা করছিলেন সকলে। কিন্তু লাফাতে গিয়ে পিছলে গিয়ে গুরুতর জখম হন রাজেশ।
ছেলে বিশাল জানিয়েছেন, “জানলা দিয়ে লাফ দেওয়ার সময় বাবার সামান্য চোট লাগে, কিন্তু মা গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।” দীর্ঘ কাঠখড় পুড়িয়ে বৃহস্পতিবার ভারতে ফেরানো হয়েছে রাজেশ দেবীর দেহ।
ঘটনার পর পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিশালের অভিযোগ, “দু’দিন ধরে আমরা জানতে পারিনি বাবা-মা কোথায় আছেন। অবশেষে এক রিলিফ ক্যাম্পে বাবাকে খুঁজে পাই। তখনই জানতে পারি মা মারা গিয়েছেন। ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকেও কোনও সহায়তা পাইনি।”
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপালে নিষিদ্ধ করা হয় ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাজার হাজার জেন জি বিক্ষোভকারী সোমবার রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন দ্রুত হিংসাত্মক চেহারা নেয়। মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে শুরু করে পাঁচতারা হোটেল পর্যন্ত একের পর এক জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই বিক্ষোভের বলি হলেন ভারতীয় পর্যটক রাজেশ দেবী।