পাঁচ মাস আগে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ডে বড় সাফল্য পেল তদন্তকারীরা। বুধবার ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-র গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করল সেই জঙ্গিদের সহযোগীকে, যিনি পাক মদতপুষ্ট লস্করের শাখা টিআরএফ জঙ্গিদের সাহায্য করেছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম মহম্মদ ইউসুফ কাটারিয়া (২৬), কুলগামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয়ভাবে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন এবং শিশুদের পড়াতেন। কিন্তু গোপনে তিনি লস্কর জঙ্গিদের সহযোগিতা করছিলেন। এনআইএ সূত্রে খবর, তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
কীভাবে ফাঁস হল যোগসূত্র
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আগস্ট মাসে কাশ্মীর পুলিশ ও সেনার যৌথ বাহিনী চালানো ‘অপারেশন মহাদেব’-এ উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের সূত্র ধরেই ইউসুফ কাটারিয়ার নাম সামনে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে, হামলার কয়েক মাস আগে তিনি লস্কর জঙ্গিদের কুলগাঁওয়ের জঙ্গলের পথ চিনিয়ে দিয়েছিলেন। পরে সেই সূত্রেই ২২ এপ্রিল বৈসরণ উপত্যকায় ঘটে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড
২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জনকে খুন করা হয়। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ছিলেন পর্যটক। অভিযোগ, তাঁদের ধর্ম জেনে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। ভয়ঙ্করতম এই ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের সামনেই মায়েদের, স্ত্রীদের ও শিশুদের সামনে পর্যটকদের গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা।
গ্রেপ্তারি ও প্রেক্ষাপট
এর আগে এই হামলায় জঙ্গিদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করা দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল এনআইএ। এবার সেই নেটওয়ার্কের আরেকজনকে হাতে পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
এই হত্যাকাণ্ডের পর ভারত-পাক সম্পর্ক চরম অবনতি হয়। বদলা নিতে ৭ মে ভারতীয় সেনা চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’, যাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়। এরপর শুরু হয় সীমান্ত সংঘর্ষ। যদিও পরে সংঘর্ষবিরতি হয়, কিন্তু দুই দেশের মধ্যে এখনও চাপা উত্তেজনা বজায় রয়েছে।
এনআইএ আশা করছে, ইউসুফ কাটারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই হত্যাকাণ্ড ও টিআরএফ জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আরও তথ্য জানা যাবে।