Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$ID is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 46

Deprecated: Creation of dynamic property Penci_AMP_Post_Template::$post is deprecated in /home/ndn4dljdt13e/public_html/newsonly24.com/wp-content/plugins/penci-soledad-amp/includes/class-amp-post-template.php on line 47
বিহার নির্বাচনে ‘ফিনিশ নন নীতীশ, ফিনিক্স হয়ে ফেরা’; মহিলা ভোট–জাতপাত–ক্যারিশমায় বদলে গেল সমীকরণ - NewsOnly24

বিহার নির্বাচনে ‘ফিনিশ নন নীতীশ, ফিনিক্স হয়ে ফেরা’; মহিলা ভোট–জাতপাত–ক্যারিশমায় বদলে গেল সমীকরণ

বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের জেডিইউ-র প্রত্যাবর্তন যেন রাজনৈতিক অঘটনেরই পুনরাবৃত্তি। ভোটের আগে বারবার দাবি উঠেছিল—নীতীশের সময় শেষ, ‘নীতীশ ফিনিশ’। প্রশান্ত কিশোর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, “জেডিইউ পঁচিশের বেশি আসন পাবে না।” তেজস্বী যাদব কটাক্ষ করেছিলেন—“নীতীশবাবু অসুস্থ, তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করছেন বিজেপির উচ্চবর্ণের নেতারা।” এমনকী ভোটের পর দল ভেঙে যাওয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু ফলাফলের ইঙ্গিত আসতেই স্পষ্ট—নীতীশ শুধু ফিরলেনই না, বরং ফিনিক্সের মতো উত্থান ঘটালেন। জোটসঙ্গী বিজেপিকেও বহু ক্ষেত্রে ছাপিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।

গত ২০ বছরে দীর্ঘ সময় কুরসিতে থাকার ফলে বিরোধিতা, বিতর্কিত মন্তব্য থেকে অসংলগ্ন আচরণের ভিডিও—সবই তাঁর ভাবমূর্তিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। তবুও শেষ ছ’মাসে কিছু কৌশলগত পদক্ষেপ পুরো সমীকরণ পাল্টে দেয়।

মহিলা ভোট—নীতীশের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ

বিহারের ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতিতে একমাত্র স্থায়ী ভিত্তি তৈরি করেছিলেন নীতীশ কুমার—মহিলা ভোট। ক্ষমতায় এসে তিনি প্রথমেই জোর দেন আইনশৃঙ্খলা ঠিক করার উপর। একসময় সন্ধের পর মেয়েদের বাইরে বেরোনো দুষ্কর ছিল এমন বিহারকে তিনি ধীরে ধীরে নিরাপদ করে তুলেছিলেন।

এর পরে আসে মেয়েদের সাইকেল প্রকল্প, শিক্ষা সহায়তা, স্বয়ংসহায়ক গোষ্ঠী ও ‘জীবিকা দিদি’ উদ্যোগ। দীর্ঘ দুই দশকের এই কাজের সুফল মেলে এবারও। পুরুষ ভোটারদের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন মহিলা ভোটাররা।

সুরাবন্দি—আরও এক দাপটপূর্ণ অস্ত্র

মদবন্দি নীতীশের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর বড় হাতিয়ার। যদিও এখনো গোপনে মদ পাওয়া যায়, কিন্তু প্রকাশ্যে মদ্যপান অনেকটাই কমেছে। ফলে গার্হস্থ্য হিংসা, অশান্তি ও অনটন কমেছে—এমনটাই মানেন বহু মহিলা।

কিন্তু এবার নতুন মোড়—প্রশান্ত কিশোর বললেন, ক্ষমতায় এলে মদ ফের চালু করবেন। তেজস্বী যাদব বললেন, তাড়ি বৈধ হবে। মহিলারা আতঙ্কে আরও শক্তভাবে জোট বাঁধলেন নীতীশের পাশে। পুরনো ইস্যু হয়েও নতুন করে সুবিধা করে দেয় এই নীতি।

১০ হাজারি স্কিম—মাস্টারস্ট্রোক

ভোটের আগে প্রত্যেক মহিলা ভোটারের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক খেলা বদলে দেয়। বহু বছরের আস্থা এবার নগদ পুরস্কারে পরিণত হয়। পুরুষদের তুলনায় বহু বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন নীতীশকে। এমনকি মোট ভোটদানের হারেও প্রথমবার পুরুষদের ছাড়িয়ে গেলেন মহিলারা।

যুবসমাজ—ক্ষোভ থাকলেও ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ সফল

যুব সমাজের একাংশ বেকারত্বে ক্ষুব্ধ হলেও নীতীশ শেষ ছ’মাসে ঘোষণা করেন মাসে ১,০০০ টাকা ভাতা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প সহ নানা উদ্যোগ। ফলে ক্ষোভ পুরোপুরি প্রভাব ফেলেনি।

বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা না করা—কোর ভোটারদের ভয়

বিজেপি বারবার বলেছে নীতীশের নেতৃত্বেই লড়াই, কিন্তু কখনওই বলেনি ভোটের পরে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। বিধায়করা সিদ্ধান্ত নেবেন—এমন বক্তব্য নীতীশ সমর্থকদের মধ্যে ভয় তৈরি করেছিল। ফলে তাঁরা একজোট হয়ে ভোট দিয়েছেন জেডিইউ-কে, যাতে বিজেপি সংখ্যায় এগিয়ে গিয়ে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী না করতে পারে।

জাতপাতের নিখুঁত সমীকরণ

চিরাগ পাসওয়ানের এনডিএ-তে যোগদান বিজেপি–জেডিইউ জোটকে শক্তিশালী করেছে। দলিত, মহাদলিত, ওবিসি, ইবিসি এবং স্ববর্ণ—সকলেরই ভোট মিলেছে এক জায়গায়। যার পালটা দেওয়া সম্ভব হয়নি মহাজোটের পক্ষে।

ক্যারিশমা ও অভিজ্ঞতা—নীতীশ ফ্যাক্টর

২০ বছরের ‘সুশাসনবাবু’ ভাবমূর্তি এবারও ভরসা জুগিয়েছে। প্রচারে নীরব, কিন্তু সুসংগঠিত–এটাই ছিল তাঁর কৌশল। বিজেপির কাছে মাথা নোয়াননি, নিজের প্রার্থীদের বিষয়ে আপস করেননি। এই দৃঢ় নেতৃত্বের ভাবমূর্তি কাজে লেগেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, “এটাই নীতীশের শেষ ভোট”—এই আবেগও ভোট টেনেছে।

বিহারের রাজনীতিতে বারবার afলক্ষ করা গেছে—নীতীশ কুমারকে অগ্রাহ্য করার ঝুঁকি কখনওই নেওয়া যায় না। সমালোচনা, বিতর্ক, জোটভাঙা–জোটগড়া—সবকিছুর মধ্যেও তিনি নিজের রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখেছেন। প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া, বিরোধীদের আক্রমণ, এমনকি নিজের শিবিরের বিভ্রান্তির মধ্যেও তিনি যে জনভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন, তা শেষ পর্যন্ত তাঁকে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছে।

ফলাফলের ইঙ্গিত স্পষ্ট—বিহারে আবারও কারিশমা দেখালেন ‘সুশাসনবাবু’।
তাই ভোটের অঙ্ক বলছে:
“শেষের আগে শেষ নয় নীতীশ—বিহারের রাজনীতিতে তিনি এখনও সমীকরণ তৈরির কারিগর।”

Related posts

রাজ্যজুড়ে হালকা শীতের আমেজ বজায়, ২২ তারিখের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা

রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে অসমেও ‘বিশেষ সংশোধন’! কমিশন ‘SR’ বললেও বকলমে ‘SIR’ বলছে বিরোধীরা

হাসিনার ফাঁসির রায়ের পর ভারতের প্রতিক্রিয়া: শান্তি–স্থিতিশীলতার বার্তা দিল্লির