ওড়িশার বালাসোর জেলার ফকির মোহন অটোনমাস কলেজে বিএড পড়ুয়া এক ছাত্রী বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। অভিযোগ, মাসের পর মাস ধরে বিভাগের প্রধানের যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন তিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতিবাদ হিসাবে প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে গায়ে আগুন দেন তিনি। তার দেহের ৯০ শতাংশের বেশি ঝলসে গেছে। বর্তমানে তিনি ভুবনেশ্বর এইমস-এ সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আর এক ছাত্রীরও গুরুতর আহত হওয়ার খবর মিলেছে।
সহপাঠীদের দাবি, ইন্টিগ্রেটেড বিএড বিভাগের প্রধান সমীর কুমার সাহু বারবার ওই ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করতেন এবং অভিযোগ না মানলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। বিষয়টি নিয়ে প্রিন্সিপাল ও পুলিশকে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করলেও, তা প্রায় নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ।
কলেজ প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করার কিছুক্ষণ পরই ছাত্রীটি আত্মহত্যার করেন। ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর। অভিযুক্ত সমীর সাহুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কলেজের প্রিন্সিপাল দিলীপ কুমার ঘোষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওড়িশার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বিভাগের ডিরেক্টরের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, যেখানে যুগ্মসচিব স্তরের এক মহিলা আধিকারিক ও অন্য কলেজের এক সিনিয়র মহিলা প্রিন্সিপাল রয়েছেন।”
মন্ত্রী আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এইমস-এ ছাত্রীর উন্নততর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বালাসোর পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ জানিয়েছেন, “আপাতত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সমীর সাহুকে আদালতে তোলা হয়েছে। কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেনসিক তদন্তও চলছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত তদন্ত শেষ করার চেষ্টা চলছে।”