হুগলি: চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক রোগী। মৃতের নাম প্রকাশ চন্দ্র বাইন (৪৩)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার রাতে প্রকাশ পেটে ব্যথা এবং রক্তবমির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পেশায় গাড়ি চালক প্রকাশ মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও চন্দননগরের মহাডাঙা কলোনীতে গত সাত বছর ধরে বসবাস করছিলেন।
হাসপাতালের সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ প্রকাশ আচমকাই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন প্রকাশ। তিনি নার্সদের টেবিল থেকে একটি কাঁচি নিয়ে অন্য রোগী ও নার্সদের আক্রমণের চেষ্টা করেন এবং নার্সিং স্টাফদের রুমের ভিতর দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে যান। এরপর, হাতে কাঁচি নিয়ে তিনি এলোপাথাড়ি হামলার চেষ্টা করতে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে ভয়ে তাঁর ধারে কেউ যেতে সাহস পাননি। কিছুক্ষণ পর ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার পর রাত তিনটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
এমন ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। সোমবার সকালে হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্ক মৌলি কর হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হাসপাতালের সুপার সন্তু ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করেন।
মৃতের স্ত্রী মিঠু বাইন জানান, “হাসপাতাল থেকে ফোন করে তাড়াতাড়ি আসতে বলে। জানায় আমার স্বামী ছুরি-কাঁচি নিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন। এমন আচরণ এই প্রথমবার করেছেন। আমি আয়া রাখিনি, বাড়িতে পুরুষ কেউ ছিল না, তাই রাতে কেউ থাকতে পারেনি। যে চলে গেল, তাকে তো আর ফিরে পাব না।”
হাসপাতাল সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, “প্রকাশ তিনদিন আগে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসা চলছিল এবং তিনি ক্রনিক অ্যালকহলিক রোগী ছিলেন। মদ না খেলে এইরকম আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। হাতে কাঁচি নিয়ে ভয় দেখিয়ে পালিয়ে ছাদে উঠে হাসপাতালে পিছনের দিক থেকে ঝাঁপ দেন।”