জনমুখী রাজ্য বাজেট, খুশি শিল্পমহল

কলকাতা: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেও রাজ্য বাজেটকে জনমুখী রাখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বাজেটে সাধারণ মানুষের উপর বাড়তি কোনও করের বোঝা চাপানো হয়নি। উল্টে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নয়া ছাড় মিলেছে। সামাজিক উন্নয়ন খাতেও বরাদ্দ করা হয়েছে বিপুল অর্থ। জোর দেওয়া হয়েছে কর্মসংস্থানে।
শুক্রবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করেন অর্থদপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বাজেট ভাষণে বলেন, আগামী ৪ বছরে রাজ্যে সরকারি, বেসরকারি ও স্বনির্ভর ক্ষেত্র মিলিয়ে ১ কোটি ২০ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য মোট ৩ লক্ষ ২১ হাজার ৩০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছে রাজ্য সরকার। ঘাটতি দেখানো হয়েছে ২ কোটি টাকার। সামাজিক পরিষেবায় এবারের বাজেটে ৭৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। সরকারের দাবি, ২০১০-১১ আর্থিক বছরের তুলনায় এই খাতে বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ। পরিকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি সংক্রান্ত প্রভৃতি ক্ষেত্রেও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১০-১১ সালের বাজেটে উন্নয়ন খাতে ১৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার সংস্থান ছিল। এবার তা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৬ হাজার কোটি টাকায়। বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় সাত গুণ।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য ১০ হাজার ৭৬৭ কোটি, স্বাস্থ্যসাথীতে আড়াই হাজার কোটি, কৃষকবন্ধুর জন্য প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। বাজেট ভাষণে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য় বলেন, এখনও পর্যন্ত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আর্থিক অনুদান পেয়েছেন ১ কোটি ৫৩ লক্ষ মহিলা। ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। বছরে ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সামাজিক পেনশনের আওতায় আনা হয়েছে ৭০ লক্ষ রাজ্যবাসীকে।
কৃষিদফতরের বরাদ্দ ৭ হাজার ১২৫ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। ৬ হাজার ৪৭ কোটি থেকে বেড়ে ১৯ হাজার ২৩৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের বরাদ্দ। স্বাস্থ্যদপ্তরের বরাদ্দ ১২ হাজার ৫৬১ কোটি থেকে বাড়িয়ে ১৭ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাজেট রূপায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান কীভাবে হবে? এদিন সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, রাজস্ব খাতে রাজ্যের আয় অনেক বেড়েছে। স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় দেওয়ার ফলে আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ শতাংশ।
শুক্রবার বাজেট ভাষণ তা চলাকালীনই স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। প্রচণ্ড হই হট্টগোলের মধ্যে বাজেট পড়তে থাকেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী। কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ দেখানোর পর ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভা ভবনের দরজার সামনে অবস্থানেও বসেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি বিধায়কদের এই ধরনের আচরণের নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওরা কাজ করতে জানে না। শুধু গোলমাল করে। ওরা ওয়াক আউট না ওয়ার্ক করে।’’

আরও পডুন : ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’, এবার রাজ্যসভার বিরোধী নেতার পদ হারাতে চলেছে কংগ্রেস

Related posts

পুজোর ভিড় সামলাতে শিয়ালদহে বিশেষ ব্যবস্থা, চালু হচ্ছে ৩১টি স্পেশাল ট্রেন

‘যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, আজ তাঁরাই উদ্বোধন করছেন’— অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, মঞ্চ থেকেই বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক