প্রথম পাতা খবর ট্যাংরাকাণ্ডে নয়া মোড়, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের ইঙ্গিত

ট্যাংরাকাণ্ডে নয়া মোড়, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের ইঙ্গিত

237 views
A+A-
Reset

ট্যাংরায় দে পরিবারের দুই গৃহবধূ ও এক কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় নতুন মোড়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে, আর কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, রোমি দে-র দুই হাতের কব্জির শিরা কাটা ছিল। গলায় একটি গভীর ক্ষত ছিল, যা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় তাঁর। সুদেষ্ণা দে-র ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। দুই হাতের শিরা কাটা এবং গলায় গভীর ক্ষত। এই আঘাত থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়, যা তাঁর মৃত্যুর কারণ।

কিশোরী প্রিয়ম্বদা দে-র মৃত্যু হয়েছে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে। তার পেটে যে খাবার ছিল, তা পুরোপুরি হজম হয়নি এবং তাতে ওষুধের গন্ধ পাওয়া গেছে। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল, বুক, দুই পা, ঠোঁট এবং মাথার তালুতেও চোটের দাগ ছিল।

মৃতদের মৃত্যুর সময় ময়নাতদন্তের অন্তত ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে বলে রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।

বুধবার সকালে ট্যাংরার অতল শূর রোডের বাড়ি থেকে রোমি, সুদেষ্ণা এবং প্রিয়ম্বদার দেহ উদ্ধার করা হয়। এর কিছুক্ষণ আগেই বাইপাসের ধারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দে পরিবারের একটি গাড়ি, যাতে ছিলেন রোমি ও সুদেষ্ণার স্বামীরা প্রসূন ও প্রণয় দে, এবং তাঁদের নাবালক পুত্র প্রতীপ দে। তারা তিনজনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শুরুতে আহতরা দাবি করেছিলেন, আর্থিক সংকটের কারণে সকলে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এবং পরে ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা মারেন। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর পুলিশের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে যে এটি আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত খুন।

বুধবার রাতেই পুলিশের তরফে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, তদন্তকারীদের হাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ এসেছে, যা এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে পুলিশ ইতিমধ্যেই পরিবারের আহত সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।

এই ঘটনার পেছনে আর্থিক সংকট, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, না কি অন্য কোনও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.