বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে রাজস্থানে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে সীমান্তে পাঠানো হয়েছিল মালদহের এক পরিযায়ী শ্রমিককে। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে পরিবারের কাছে ফিরলেন ওই যুবক।
মালদহ জেলার কালিয়াচকের বাসিন্দা আমির শেখ রাজস্থানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান। পরিবারের অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বলায় তাঁকে আটক করে তাঁর যাবতীয় নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপর দুই মাস ধরে তাঁকে আটকে রেখে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফ তাঁকে বাংলাদেশ সীমান্তে ‘পুশব্যাক’ করে দেয়।
এই ঘটনার পর কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়, যেখানে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার জন্য বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত শ্রমিকদের হয়রানির অভিযোগ ওঠে। বুধবার আমির শেখের মামলাটি আদালতে ওঠে। তাঁর আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী জানান, আমিরের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁকে জোর করে সীমান্তে পাঠানো হয়।
বিএসএফ আদালতে দাবি করে, আমির Sheikh নাকি অসাবধানতাবশত বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং বৈধ নথি দেখাতে না পারায় তাঁকে আটক করা হয়। পরে স্থানীয় পুলিশের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়।
হাইকোর্ট এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং দ্রুত আমিরকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের রায়ের পর গতকাল বিএসএফ তাঁকে বসিরহাট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রাথমিক যাচাইয়ের পর পুলিশ নিশ্চিত হয় যে আমির ভারতীয় নাগরিক এবং এরপর তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ফিরে এসে আমির বলেন, “আমি রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন আমাকে ধরে নিয়ে যায়, বলে আমি বাংলাদেশি। নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও আমায় বিশ্বাস করেনি। দু’মাস ধরে জেলে ছিলাম। পরে বিএসএফ আমাকে জোর করে সীমান্তে পাঠিয়ে দেয়।”
আমিরের বাবা জিয়াউল শেখ বলেন, “ছেলেকে ফিরে পেয়ে স্বস্তি পেয়েছি। এতদিন আমরা অজানায় ছিলাম, শুধু কাঁদছিলাম। বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে যেভাবে আমার ছেলেকে বাংলাদেশি বলা হলো, তা মেনে নেওয়া যায় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলের কান্নার ভিডিও দেখে আমরা হতভম্ব হয়ে পড়ি। অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে ছেলে ফিরে এসেছে।”