কসবার ঘটনায় পুলিশের ‘হালকা বলপ্রয়োগ’-এর জেরে চলা বিতর্ক আরও তীব্র হলো কলকাতা পুলিশের প্রকাশিত ভিডিয়োয়। সেই ভিডিয়োয় এক বিক্ষোভকারীকে ‘পেট্রল নিয়ে আয়, জ্বালিয়ে দেব’ বলতেও শোনা যায়। পুলিশের দাবি, এমন উত্তেজক পরিস্থিতিতে তাদের বাধ্য হয়ে সীমিত বলপ্রয়োগ করতে হয়েছে।
বুধবার ডিআই দফতর অভিযান চলাকালীন কসবার ডিআই অফিসে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিযোগ, পরিদর্শক না থাকায় উত্তেজনা ছড়ায়, তালা ভাঙার চেষ্টা হয়, এবং পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। চাকরিহারাদের অভিযোগ, তাঁদের গালাগালি, মারধর ও লাথি মারা হয়েছে। সেই ছবি-ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘ওই ভাবে লাথি মারা অনুচিত। পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ তবে তিনি দাবি করেন, ভাইরাল ভিডিয়োগুলি আংশিক এবং সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না। পুলিশের ছ’জন আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
Some unscrupulous individuals are spreading misinformation that videos posted by Kolkata Police do not pertain to yesterday’s incident.
— Kolkata Police (@KolkataPolice) April 10, 2025
Clarification: the clips were merged only for representation in a single video. Separate clips are below, including one showing a protestor… pic.twitter.com/4RTxSdYtkg
পুলিশ পরে এক্স হ্যান্ডলে বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো পোস্ট করে জানায়, ঘটনাস্থলে কিছু বিক্ষোভকারী আগ্রাসী ছিলেন এবং পেট্রল ছড়িয়ে আগুন লাগানোর হুমকিও দিয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেই পুলিশকে পদক্ষেপ করতে হয়েছে। পুলিশের ভাষায়, “আত্মরক্ষার্থে সামান্য বলপ্রয়োগ ও উচ্ছৃঙ্খল ভিড় ছত্রভঙ্গ করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছিল।”
ঘটনা সম্পর্কে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি কাম্য নয়।’’ তিনি জানান, সরকার সুপ্রিম কোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করবে এবং ইতিমধ্যেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ স্থিতাবস্থার আবেদন করেছে।
চাকরিচ্যুতদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, আন্দোলনের পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে আলোচনার পথও খোলা রাখা উচিত। তাঁর নেতৃত্বে সপ্তাহের শেষেই এক বৈঠক হবে বলে জানান তিনি। তাঁর মত, ‘‘ধ্বংসাত্মক আন্দোলন ও আলোচনার প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে পারে না।’’
পরিস্থিতি এখন স্পষ্টতই এক টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে—যেখানে প্রশাসনের যুক্তি, নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা এবং আইনরক্ষার প্রয়োজনীয়তা, আর চাকরিচ্যুতদের পক্ষ থেকে চাকরি ফিরে পাওয়ার মরিয়া লড়াই। এখন দেখার, শনিবারের বৈঠকে কোনও সমাধানের রাস্তা খোলে কিনা।