হাওড়া: অবিরাম বৃষ্টি ও ডিভিসির অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, উদয়নারায়ণপুরের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১১২টি গ্রাম সম্পূর্ণ জলমগ্ন। হাজার হাজার গ্রামবাসী এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের তৎপরতায় তাঁদের উদ্ধার করে অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম:
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জোরকদমে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে উদয়নারায়ণপুরের ফ্লাড সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দুই হাজার বাসিন্দাকে ফ্লাড সেন্টারে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং বাকিদেরও দ্রুত উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে গ্রামবাসীদের থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পৌঁছে গিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরে। এলাকায় থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা:
হাওড়া ছাড়াও হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং বীরভূম জেলারও বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত সপ্তাহ থেকে একটানা অতি ভারী বৃষ্টিপাত ও ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে এই সমস্ত এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
ডিভিসির জল ছাড়া:
ডিভিসির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারও মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। যদিও নিম্নচাপ সরে যাওয়ার ফলে বৃষ্টিপাত কমেছে, তবে ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে পরিস্থিতির উন্নতির বদলে আরও অবনতি হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে এবং নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিসির অতিরিক্ত জল ছাড়ার কড়া সমালোচনা করেছেন এবং একে ‘ম্যান-মেড’ বন্যা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি ডিভিসির কাছে অনুরোধ করেছেন যাতে জল ছাড়ার ক্ষেত্রে আরও নিয়ন্ত্রণ আনা হয় এবং বন্যা কবলিত অঞ্চলে দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।