মহাকুম্ভের অনিয়ম ও একের পর এক দুর্ঘটনা নিয়ে সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দেওয়া ‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করলেন শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শঙ্করাচার্য স্পষ্ট জানান, “৩০০ কিলোমিটার লম্বা যানজট তৈরি হয়েছে, পুণ্যার্থীদের দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হচ্ছে। যেখানে তাঁরা স্নান করছেন, সেই গঙ্গার জলও দূষিত। বিজ্ঞানীরাও জানিয়েছেন, এই জল স্নানের যোগ্য নয়। তাহলে কেন আগে থেকে এর শুদ্ধিকরণের ব্যবস্থা করা হয়নি?”
তিনি আরও বলেন, “মহাযোগের নামে অতিরঞ্জিত প্রচার করা হচ্ছে, অথচ ভিড় সামলানোর মতো পরিকল্পনাই নেই। নিরাপত্তার অভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে, আর সেগুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা আরও গুরুতর অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে যদি কেউ ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলেন, তবে তার বিরোধিতা করব কীভাবে?”
প্রসঙ্গত, প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে বহু পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ট্রেনে উঠতে গিয়ে ঘটে গেছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এসব নিয়ে বিধানসভায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মহাকুম্ভের গরিমা নষ্ট করছি না, কিন্তু ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করবে বিজেপির পরিষদীয় দল এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে অভিযোগ জানাবে। তবে শঙ্করাচার্যের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “শঙ্করাচার্যও বলছেন অব্যবস্থা রয়েছে। তাহলে বিজেপি বলুক, তিনি ভুল বলছেন কিনা! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুম্ভের অব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, ধর্মের বিরুদ্ধে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরাও গঙ্গাসাগর মেলা করি। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জলপথ পেরিয়ে আসেন, কিন্তু সেখানে এমন বিশৃঙ্খলা হয় না।”
বিজেপি অবশ্য নিজেদের অবস্থানে অনড়। তারা দাবি করছে, মহাকুম্ভকে অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাই তাঁদের প্রতিবাদ চলবে।