ভিনরাজ্যে কর্মরত বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগের আবহে নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত সেই ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রবল সাড়া মিলেছে রাজ্যের শ্রমিক সমাজের মধ্যে। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, অনলাইন পোর্টাল চালু হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক আবেদন জমা দিয়েছেন। অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে অফলাইনে আবেদন জমা পড়ছিল, তবে গত সোমবার চালু হওয়া পোর্টালে আবেদন আরও গতি পেয়েছে।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ভিনরাজ্য থেকে যারা পশ্চিমবঙ্গে ফিরবেন, তাঁদের এককালীন ৫,০০০ টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, নতুন কাজ না পাওয়া পর্যন্ত টানা ১২ মাস প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা ভাতা পাবেন তাঁরা। রাজ্য সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২২ লক্ষ ৪০ হাজার শ্রমিক ভিনরাজ্যে কর্মরত। এর মধ্যে ৪০ হাজার শ্রমিক ইতিমধ্যেই রাজ্যে ফেরার আগ্রহ দেখিয়েছেন।
আবেদনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যা এসেছে মুর্শিদাবাদ ও মালদহ থেকে। শ্রম দফতরের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, সময়ের সঙ্গে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে আবেদনকারীদের তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, আবেদনে জমা দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য যাচাই করতে হবে। কারণ, সরাসরি ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমেই শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে ভাতা পৌঁছবে।
প্রশাসন আবেদনকারীদের কাজের প্রকৃতি এবং তাঁরা কোন রাজ্যে কী কাজে যুক্ত ছিলেন, তাও খতিয়ে দেখবে। সূত্রের খবর, কোভিডের সময় রাজ্যে ফেরানো শ্রমিকদের জন্য চালু হওয়া ‘কর্মশ্রী’ পোর্টালের তথ্যও কাজে লাগানো হচ্ছে। যাঁদের নাম ইতিমধ্যেই ‘কর্মশ্রী’-তে আছে, তাঁরা যেমন ‘শ্রমশ্রী’-তে আবেদন করতে পারবেন, তেমনই যাঁরা তখন নথিভুক্ত হননি, তাঁরাও নতুন প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন।
রাজ্য সরকারের দাবি, ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাঁদের রাজ্যে স্থায়ীভাবে কাজে ফিরিয়ে আনবে।