ডেস্ক: বিধানসভায় আলোচনার প্রথম দিনেই নিজেদের অবস্থান জানান দিলেন, শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আলোচনার দাবি করে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চান তাঁরা। অধ্যক্ষ সে প্রস্তাব খারিজ করে দিতেই শোরগোল শুরু হয় অধিবেশন কক্ষে। রাজ্যপালের ভাষণ, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনার সময়ে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল অধিবেশন কক্ষ। বিজেপি এবং তৃণমূল বিধায়কদের তরজা শুরু হয়। তৃণমূল বিধায়করা বক্তব্য রাখতে উঠলেই কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সপ্তদশ বিধানসভার প্রথম বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার প্রথম ভাগে রাজ্যপালের ভাষণের উপর জবাবি ভাষণ দেন বিধায়করা। এদিন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন কক্ষে ঢোকার পরই বিরোধী দলের তরফে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনার কথা বলা হয়। অধ্যক্ষ পাল্টা পরামর্শ দেন, রাজ্যপালের ভাষণের উপর যখন তাঁদের বলার সময় আসবে তখন প্রস্তাবটি তাঁরা উত্থাপন করতে পারেন। এরপরই সেই মুহূর্তে মুলতুবি প্রস্তাব খারিজ করে দেন।
রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে আলোচনার সময় উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। যোগী আদিত্যনাথের নাম করে আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাকে হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। ধন্যবাদ জানাই বাংলার মানুষকে। তাঁরা সেই চেষ্টা রুখে দিয়েছেন।’ এরপরই উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ তুলে তোপ দাগেন বিজেপিকে। এরই প্রতিবাদে সরব হয় বিজেপি। পালটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘একজন ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। একজন ভোটে জিতে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন।’ সঙ্গে সঙ্গে দফায় দফায় বিধানসভায় গণ্ডগোল শুরু হয়।
বিজেপির এদিনের প্রথম বক্তা ছিলেন মিহির গোস্বামী। তিনি তাঁর বক্তব্যে রাজ্য সরকারকে নারী নির্যাতনের সরকার, কাটমানির সরকার শব্দবন্ধে বেঁধেন। এদিকে বিজেপি বিধায়কের এই বক্তব্যের বিরোধিতায় শাসকদলের বেঞ্চ থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। মিহির গোস্বামীর বক্তব্যের পর বক্তব্য রাখেন স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভার রদবদলের জল্পনার মধ্যেই বাতিল মোদীর বৈঠক
তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘বিরোধী দল প্রথম দিন থেকেই অস্থিরতা তৈরি করছে। আমাদের লড়াই শুধু রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ছিল না। আমাদের লড়াই ছিল অশিক্ষার বিরুদ্ধে। গত ভোটে দিল্লি থেকে কত বড় বড় নেতা এল। বড় বড় উড়োজাহাজ নিয়ে এল। যদিও বাংলার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে মান্যতা দিল। বিরোধীদের কুৎসাকে আমরা পাত্তা দিইনি। আমরা উন্নয়ন করেছি। কেন্দ্র ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। এক শ্রেণীর মানুষ ভুয়ো খবর, জাল ভিডিও নিজেদের স্বার্থে প্রচার করেছে। যদিও বাংলার মানুষ এগুলো উপেক্ষা করেছে।’
আলোচনা চলাকালীন দফায় দফায় বিরোধী দলনেতা বেরিয়ে যান অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে। তাতে তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হন স্পিকার। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য বিধানসভা।বক্তব্য রাখার সময় শুভেন্দুকে বাধাদানের অভিযোগ।বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট বিজেপি বিধায়কদের। শুভেন্দুর অভিযোগ,‘স্পিকার বিরোধীদের সংরক্ষণ দিচ্ছেন না। তৃণমূলের ক্ষমতা-সন্ত্রাস বিধানসভার ভিতরেও ধরা পড়েছে।বিরোধীদের কণ্ঠস্বর বিধানসভাতেও আক্রান্ত।’