রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) ঘোষণা হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনায়। উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি, কোচবিহারের দিনহাটা, এবং বীরভূমের ইলামবাজারে ঘটে গিয়েছে তিনটি পৃথক ঘটনা—যার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গী দলগুলিকে একহাত নিয়ে বলেন, “বিজেপির ভয়, ঘৃণা আর বিভাজনের রাজনীতির করুণ পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করছি। বাংলায় এসআইআর ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই একের পর এক ট্র্যাজেডি ঘটছে, যা অনায়াসে এড়ানো যেত। এর জন্য দায়ী কে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি এর দায় নেবেন?”
তিন দিনের তিন মর্মান্তিক ঘটনা:
- পানিহাটি (উত্তর ২৪ পরগনা): সোমবার রাতেই ৫৭ বছরের প্রদীপ কর আত্মহত্যা করেন। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী।”
- দিনহাটা (কোচবিহার): পরের দিন ৬৩ বছরের খইরুল শেখ বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নামের বানান ভুল থাকায় আতঙ্কে ছিলেন বলে দাবি পরিবারের। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
- ইলামবাজার (বীরভূম): বৃহস্পতিবার ৯৫ বছরের ক্ষিতীশ মজুমদার আত্মহত্যা করেন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের নাম না দেখে আতঙ্কিত হয়েই আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “এসআইআর আতঙ্কে বাংলার সাধারণ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। এটি ভয়ানক। বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গীরা এমন এক ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে, যা মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। আমি বাংলার মানুষের পাশে আছি, এবং শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।”
তিনি আরও বলেন, এই আতঙ্ক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নীতি এবং বিজেপির বিভাজনমূলক রাজনীতির ফল। বাংলার মানুষকে তিনি শান্ত থাকার বার্তা দেন এবং আশ্বাস দেন যে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে না।