SIR ইস্যুতে আরও একবার ঐক্যবদ্ধভাবে বিক্ষোভে নামল ‘ইন্ডিয়া’ জোট। মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মকর দ্বারের সামনে বিরোধী দলের সাংসদরা একসঙ্গে ধরনায় বসেন। প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে তাঁরা SIR–এর বিরুদ্ধে সরব হন। বিক্ষোভে হাজির ছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা, সোনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি-সহ একাধিক দলের নেতা-নেত্রীরা।
চমকপ্রদভাবে এই বিক্ষোভে উপস্থিত দেখা যায় তৃণমূলের দুই সাংসদ বাপী হালদার এবং মমতাবালা ঠাকুরকে। এতদিন তৃণমূল সংসদে কংগ্রেস থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল এবং ‘দাদাগিরি’ মানবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু SIR নিয়ে যে অসন্তোষ রাজ্যজুড়ে তীব্র হয়েছে, তার জেরে এদিন বিরোধী শিবিরে তৈরি হল অপ্রত্যাশিত ঐক্য।
সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভ যেমন চলেছে, তেমনই সংসদের অন্দরে বিরোধীরা SIR নিয়ে আলোচনা চেয়ে উত্তপ্ত করেন অধিবেশন। বিরোধীদের প্রতিবাদে দফায় দফায় মুলতুবি করতে হয় সংসদের কার্যক্রম।
অবাক করা ভাবে SIR নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছেন বিজেপিরই সাংসদ ও রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে বিএলওদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তাই জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা প্রয়োজন।
এদিকে কেন্দ্রও সমাধানের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “আমরা সব বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলেছি। ইলেক্টোরাল রিফর্মস থেকে দেশের মানুষের সব ইস্যু—সবকিছু নিয়েই আলোচনা করতে প্রস্তুত। বিরোধী দলনেতাদের বৈঠকে ডেকেছি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করুন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে।”
এর পাশাপাশি মঙ্গলবার সংসদে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে মোবাইলে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি নিয়ে। কংগ্রেস দাবি করেছে, সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরি এ বিষয়ে মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের বলেন, “মানুষের ফোনে সরকারি অ্যাপ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা অগণতান্ত্রিক। এই বিষয়ে সংসদে স্বচ্ছ আলোচনা প্রয়োজন।”
একদিকে SIR বিতর্ক, অন্যদিকে সঞ্চার সাথী অ্যাপ বিতর্ক—এই দুই বিষয়ে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সরব হওয়ায় শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই সংসদ অস্থির হয়ে উঠেছে। আগামী দিনেও এই ইস্যুগুলিকে কেন্দ্র করে উত্তাপ বাড়বে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।