কেন্দ্রীয় হারে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়া হয় না দেশের অন্তত ১২টি রাজ্যে—সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া লিখিত বক্তব্যে জানাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সোমবার দাখিল করা ওই নথিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, ডিএ নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আর্থিক সামর্থ্য ও নীতির উপর, কেন্দ্রের হারে মিলিয়ে দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
রাজ্যের দাবি, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩০৯ অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্যের অধিকার রয়েছে নিজেদের কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা নির্ধারণ করার। সুপ্রিম কোর্ট আগেও পর্যবেক্ষণে বলেছে, কেন্দ্রের নীতি অনুসরণ করতে রাজ্য বাধ্য নয়। ফলে ডিএ কোনও মৌলিক অধিকার নয়, বরং রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি বা সার্ভিস রুলস অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
কোন কোন রাজ্য কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেয় না
লিখিত বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছে, অন্তত ১২ রাজ্য কেন্দ্রের ডিএ হার মেনে চলে না। সেগুলি হল—
- কেরল
- ছত্তীসগঢ়
- হিমাচলপ্রদেশ
- কর্নাটক
- মহারাষ্ট্র
- মণিপুর
- মেঘালয়
- মিজোরাম
- নাগাল্যান্ড
- সিকিম
- তেলঙ্গানা
- ত্রিপুরা
রাজ্যের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, যেসব রাজ্যের রিভিশন অফ পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স (ROPA) নিয়মে কনজ়্যুমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI)-এর উল্লেখ রয়েছে, তাদের মধ্যেও ডিএ প্রদানে বৈষম্য আছে। এই তালিকায় রয়েছে—ছত্তীসগঢ়, মেঘালয়, হিমাচলপ্রদেশ ও সিকিম।
মামলার অগ্রগতি
গত ৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শেষ হলেও রায় ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়েছে। আদালত জানিয়েছিল, পক্ষগুলি চাইলে লিখিত বক্তব্য জমা দিতে পারে। সেই নির্দেশ মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সোমবার নিজেদের বক্তব্য জমা দিয়েছে।
এবার মামলাকারী সরকারি কর্মচারীদের আইনজীবী করুণা নন্দী রাজ্যের যুক্তির জবাব দাখিল করবেন। বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি বিপুল মনুভাই পাঞ্চোলির বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই পাল্টা বক্তব্য জমা দেওয়া যাবে। আইনজীবীদের একাংশের মতে, সব পক্ষের বক্তব্য জমা পড়ার পরই রায় ঘোষণা করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।