দরকার হলে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বাড়ানোর নির্দেশ দিতেই পারে সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ–সহ একাধিক রাজ্যে যে আপত্তি উঠেছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কড়া ভাষায় সতর্ক করল শীর্ষ আদালত। বুধবার বিভিন্ন মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত স্পষ্ট জানান, “যদি দরকার মনে করি, তাহলে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়সীমা আমরা বাড়ানোর নির্দেশ দিতেই পারি।” আদালতের এই পর্যবেক্ষণকে নির্বাচন কমিশনের জন্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ‘হুঁশিয়ারি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই বাংলা, তামিলনাড়ু, কেরল–সহ একাধিক রাজ্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল SIR প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের দরজায় কড়া নেড়েছে। মামলাকারীদের মূল অভিযোগ—নির্বাচন কমিশন অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে SIR পরিচালনা করছে, সময়সীমা অত্যন্ত কম, আর মাঠপর্যায়ের BLO–দের উপর বেড়ে চলেছে অমানবিক চাপ। এই যুক্তিগুলির ভিত্তিতেই আদালতে পৌঁছেছে একের পর এক আবেদন।
এদিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বাংলা সংক্রান্ত মামলাগুলির পরবর্তী শুনানির তারিখ ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেন। তামিলনাড়ুর মামলাগুলির শুনানি পিছিয়ে যায় ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু তার চেয়েও বড় বার্তা ছিল আদালতের পর্যবেক্ষণ—যদি মামলাকারীরা সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আদালতে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তবে সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি খসড়া প্রকাশের সময়সীমা পিছিয়ে দিতে প্রস্তুত।
শুনানির সময় উঠে আসে আরও উদ্বেগজনক তথ্য। আদালতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, যে সময়সীমার মধ্যে SIR প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা BLO–দের জন্য প্রায় অসম্ভব। তাঁর বক্তব্য, অতিরিক্ত চাপের ফলে পশ্চিমবঙ্গের একজন BLO আত্মহত্যা করেছেন। এই তথ্য এজলাসে আলোড়ন তোলে এবং বিচারপতিরাও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নেন।
শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট বার্তা—নির্বাচন কমিশন বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে হবে। অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো বা মাঠপর্যায়ের কর্মীদের উপর অস্বাভাবিক চাপ তৈরি করলে তা সুপ্রিম কোর্টের নজরে পড়বে। ফলে এখন অপেক্ষা ৪ ও ৯ ডিসেম্বরের পরবর্তী শুনানির দিকে, যেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে SIR–এর সময়সীমা নিয়ে।