পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনপ্রিয় স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’ ছুঁয়ে ফেলল ঐতিহাসিক মাইলফলক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যের এই বিনামূল্যের স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ১ কোটি মানুষ চিকিৎসা সুবিধা পেয়েছেন। সোমবার এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ একটি পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১ কোটি মানুষ ‘স্বাস্থ্যসাথী’র মাধ্যমে চিকিৎসা পেয়েছেন। রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে ১৩,১৫৬ কোটি টাকা।”
২০১৬ সালের শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত প্রকল্পটির বয়স নয় বছরও হয়নি, তবুও রাজ্যের এক কোটি নাগরিকের কাছে স্বাস্থ্যসাথী পৌঁছে গেছে—এমনটাই দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১১ লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সাড়ে ৮ কোটির বেশি মানুষ ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এই প্রকল্পের মাধ্যমে জটিল ও ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচারও করা হচ্ছে। প্রতি পরিবার বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা কভারেজ পান এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
নারী-ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবেও ‘স্বাস্থ্যসাথী’কে উপস্থাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিটি পরিবারে একজনের নামে এই কার্ড ইস্যু করা হয়, এবং সেই কার্ড দেওয়া হয় পরিবারের কত্রীর নামে। অর্থাৎ, এই প্রকল্প কেবল স্বাস্থ্যসুরক্ষা নয়, সমাজে নারীর মর্যাদা ও অধিকারকেও প্রতিফলিত করছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’ পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হয়নি। এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমাদের নিজস্ব স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প আছে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। কেন্দ্রের প্রকল্পে নানা নিয়মে অনেককে বাদ দেওয়া হয়।” ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও হয়েছিল, তবে মুখ্যমন্ত্রী নিজের অবস্থানে অটল ছিলেন।
আজ, সেই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ রাজ্যের নিজস্ব স্বাস্থ্য প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’ পশ্চিমবঙ্গবাসীর জন্য এক মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে — ১ কোটি মানুষের জীবনে চিকিৎসার নিশ্চয়তা পৌঁছে দিয়েছে।