ঠাকুরবাড়িতে ধর্মীয় শংসাপত্র বিতরণ ঘিরে ফের প্রকাশ্যে এল ঠাকুর পরিবারের অন্দরের দ্বন্দ্ব। বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ালেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘাধিপতি তথা বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। এতে গেরুয়া শিবিরে অশান্তি আরও স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শনিবার ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে শান্তনু শিবিরের পক্ষ থেকে বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। এতে আপত্তি জানিয়ে সুব্রত অভিযোগ করেন, ধর্মীয় স্থানে এভাবে ক্যাম্প করা ঠিক নয়। শান্তনুর দাবি, ক্যাম্পে উপস্থিত মতুয়া ভক্তদের হুমকি দেন সুব্রত। পালটা জবাবে সুব্রতের বক্তব্য, “নাটমন্দিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। ক্যাম্প করলে অসুবিধা হবে বলে সরে যেতে বলি।”
শুধু তাই নয়, সুব্রত অভিযোগ তুলেছেন, “ঠাকুরবাড়ির ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দালালরাজ চালাচ্ছেন শান্তনু। আমি দলমত নির্বিশেষে সকল মতুয়াদের কাছে এর বিচার চাই।”
অন্যদিকে শান্তনুর অভিযোগ, তাঁর দাদা সুব্রত শিগগিরই তৃণমূলে যোগ দেবেন। “আমি মন্ত্রী হয়ে গিয়েছি বলে হিংসা হচ্ছে সুব্রতের। তাই তৃণমূলে গিয়ে মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে। শুধু পতাকা ধরতে বাকি আছে।” তবে সুব্রত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, “ওটা শান্তনুর মনের কথা। আমার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।”
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সুব্রত ও তাঁর মা রানি ঠাকুর বৈঠক করেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে। যদিও সুব্রতের দাবি, “আমার কাছে আগে পরিবার, পরে রাজনীতি। পরিবারের স্বার্থে জেঠিমা মমতাবালার সঙ্গে বৈঠক করেছি।”
শান্তনুর মা ছবিরানি ঠাকুরের বক্তব্য, “শান্তনুর নেতৃত্বে কিছু লোক ঠাকুরবাড়ির পরিবেশ নষ্ট করছে। সুব্রত মতুয়া মহাসংঘাধিপতি হিসেবে ন্যায্য অধিকারের দাবি নিয়ে বড়দি মমতাবালার সঙ্গে আলোচনা করেছে।”
অন্যদিকে মমতাবালা ঠাকুর বলেছেন, “সুব্রত আর শান্তনু দু’জনেই আমার সন্তানসম। গণ্ডগোল মেটাতে এসেছিলাম। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সুব্রতের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি।”
ঠাকুরবাড়ির এই দ্বন্দ্ব বিজেপির অভ্যন্তরীণ অশান্তিকে ফের সামনে এনে দিয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই পরিস্থিতি থেকে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণও তৈরি হতে পারে।