বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হতেই রাজ্যজুড়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসে। কোনও বৈধ ভোটারের নাম যাতে তালিকা থেকে বাদ না যায়, সেই লক্ষ্যেই এবার সংগঠনকে সরাসরি নামিয়ে মাঠে নামালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার দলের সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান–সহ প্রায় ১৫ হাজার নেতাকে নিয়ে ভারচুয়াল বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশ দেন অভিষেক।
সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত — আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে চালু হচ্ছে ৬২০০টি হেল্পডেস্ক, যেখানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটার তালিকা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের কাজ হবে।
হেল্পডেস্কের কাজ ও কাঠামো
প্রতিটি গ্রাম, পঞ্চায়েত ও পুর এলাকায় থাকবে এই হেল্পডেস্ক।
সেখানে থাকবে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সংযোগ, এবং প্রশিক্ষিত তৃণমূল কর্মীরা, যারা ভোটার তালিকার ফর্ম পূরণে নাগরিকদের সাহায্য করবেন।
অভিযোগ জানাতে খুলে দেওয়া হয়েছে ‘দিদির দূত’ অ্যাপ, আর প্রতিদিনের কাজের রিপোর্ট পাঠাতে হবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের দপ্তরে।
অভিষেক বলেন, “এসআইআরের সময় যদি কারও নাম বাদ যায়, সেটি মানা হবে না। প্রত্যেক বৈধ ভোটার যেন নিজের অধিকার পান — সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”
বিএলওদের ‘ছায়াসঙ্গী’ হবেন বিএলএরা
রাজ্যে মোট ৯০ হাজার বুথে বিএলওরা (Booth Level Officer) কাজ করবেন ভোটার যাচাইয়ের দায়িত্বে। তৃণমূল এবার তাদের পাশে রাখতে চাইছে দলের বিএলএদের (Booth Level Agent)। অভিষেকের নির্দেশ, “বিএলওদের এক মিনিটের জন্যও চোখের আড়াল করবেন না। যাঁরা মাঠে কাজ করছেন, তাঁদের সঠিকভাবে সাহায্য করুন। বিজেপি বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, তাই সচেতন থাকতে হবে।”
সূত্রের খবর, অভিষেক জানিয়েছেন— বিজেপির লক্ষ্য ভোটারদের বাদ দেওয়া নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ করা। তাই তাঁরা বিএলওদের উপর চাপ তৈরি করতে পারেন বলেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
জনসংযোগের জন্য হেল্পলাইন নম্বর
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিট অফিস থেকে জনতার অভিযোগ সরাসরি জানাতে একটি নম্বর চালু করা হয়েছে —
৮১৪২৬৮১৪২৬
বিরোধীদের কটাক্ষ
তৃণমূলের এই পদক্ষেপে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, “কী হবে ওই হেল্পডেস্কে? বিএলওদের ভয় দেখানোই হবে তৃণমূলের কাজ।”
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া। ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা যাচাই ও ফর্ম বিলির কাজ, যা চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
তৃণমূলের মতে, এবারের লক্ষ্য একটাই — “একজন বৈধ ভোটারের নামও যেন না বাদ পড়ে।”