‘আমিও যাব, দেখি কার কত দম!. ’ত্রিপুরায় তৃণমূল প্রতিনিধিদলের উপর পুলিশি বাধায় হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে

ত্রিপুরায় দলীয় পার্টি অফিসে হামলার প্রতিবাদে যাওয়া তৃণমূল প্রতিনিধিদলকে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হল। বুধবার আগরতলা বিমানবন্দরে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ধর্না দেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ, সাংসদ সায়নী ঘোষ ও মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন প্রতিমা মণ্ডল ও টিএমসিপি নেতা সুদীপ রাহা।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। উত্তরবঙ্গের দুর্যোগকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ হামলার মুখে পড়েন। এরপরই ত্রিপুরায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়। অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে।

তার প্রতিবাদে বুধবার সকালে তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল আগরতলায় পৌঁছয়। অভিযোগ, বিমানবন্দর থেকে তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছানোর জন্য চারটি গাড়ি থাকার কথা থাকলেও একটিমাত্র গাড়ি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে প্রিপেড ট্যাক্সি নিতে গেলে পুলিশ তাতেও বাধা দেয়। দীর্ঘ কথাবার্তার পরও সমস্যা মেটেনি, তাই বিমানবন্দর চত্বরে বসেই ধর্নায় সামিল হন তৃণমূল নেতারা।

এ ঘটনার খবর পেয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামামাত্রই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ত্রিপুরায় আমাদের টিমকে প্রিপেড ট্যাক্সিও দেওয়া হয়নি। আমি বলেছি, হেঁটে যান। যদি দরকার হয়, আমিও যাব। দেখি কার কত দম!”

বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, “আগে নিজের ঘরের দিকে তাকান।”

তিন ঘণ্টা ধর্নার পর অবশেষে পুলিশই গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়। এরপর চারটি গাড়িতে করে তৃণমূল প্রতিনিধিদল আগরতলার পার্টি অফিসে পৌঁছয়।
সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল ঘোষ বলেন, “ত্রিপুরার নেতারা বাংলায় এসে ঘোরেন, বিয়েবাড়ি যান—কোথাও বাধা পান না। কিন্তু আমরা গেলেই আতঙ্ক! বিজেপি আমাদের এত ভয় পায় কেন?”

তিনি আরও বলেন, “দক্ষিণী সিনেমার মতোই ত্রিপুরায় চলছে নাটক—চালককে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ট্যাক্সি নিতে দিচ্ছে না, হেঁটে গেলে আটকাচ্ছে!

ত্রিপুরা পুলিশের ডিজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বেরিয়ে সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন,“এর আগেও তৃণমূলের অফিসে হামলা হয়েছে, কিন্তু পুলিশ কখনও ব্যবস্থা নেয়নি। এবারও একই চিত্র। বিজেপির কর্মীরাই হামলা চালিয়েছে, পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে।”  তিনি আরও বলেন, “খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষের উপর হামলাকে তৃণমূল সমর্থন করে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। আমরা হিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করি না।”

তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ বলেন, “আমরা গিয়েছিলাম দলের কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে। বিজেপি তৃণমূলকে আইন-শৃঙ্খলার পাঠ দেয়, অথচ ত্রিপুরায় পুলিশের সামনেই পার্টি অফিসে ভাঙচুর হয়!”

তৃণমূলের দাবি, খগেন মুর্মুর উপর হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতির পরই ত্রিপুরায় তাদের পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে বিজেপি।

Related posts

বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু! ৭ দিনের মধ্যে SIR-এর প্রস্তুতি শেষের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের

বিহারে ছট পুজোয় ফ্লাইটে ছাড়, অথচ উত্তরবঙ্গে ভাড়া তিনগুণ! বৈষম্যের অভিযোগে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

উৎসবের রেশে রাজ্যে শুরু ভোট প্রস্তুতি! বাংলায় নির্বাচন কমিশনের বিশেষ টিম, নজরে পূর্ব মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া