বাংলায় শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন, নাগরিকত্ব প্রমাণে লাগবে এই ১১টি নথির যে কোনও একটি

আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল করতে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। বিহারে সদ্য সম্পন্ন হয়েছে ভোটার তালিকার ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ (SIR) বা বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। এবার সেই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বাংলা-সহ গোটা দেশেই। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী মাসের শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হবে SIR প্রক্রিয়া।

নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য—অযোগ্য ভোটার ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ দিয়ে নিশ্চিত করা যে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটদানের অধিকার পান।

ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া

এই বিশেষ সংশোধনের সময়ে বুথ স্তরের আধিকারিকরা (BLOs) ভোটার ও নতুন আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করবেন। তাঁদের হাতে একটি ফর্ম তুলে দেওয়া হবে, যা পূরণ করে ভোটারদের জমা দিতে হবে। এর সঙ্গে জমা দিতে হবে ভারতীয় নাগরিকত্বের সেলফ-অ্যাটেস্টেড ঘোষণাপত্র।

নাগরিকত্ব প্রমাণে প্রয়োজনীয় ১১টি নথি

বিহারে যে ১১টি নথি নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকারের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে, বাংলাতেও সেগুলিই প্রযোজ্য হতে পারে—

  1. সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পরিচয়পত্র
  2. ১ জুলাই ১৯৮৭-র আগে জারি হওয়া সরকারি নথি
  3. বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া জন্ম সার্টিফিকেট
  4. পাসপোর্ট
  5. বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (সাল ও তারিখ উল্লেখ থাকতে হবে)
  6. জেলা শাসক বা সমতুল কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেট
  7. বনপালের সার্টিফিকেট
  8. কাস্ট সার্টিফিকেট
  9. এনআরসি অন্তর্ভুক্তির প্রমাণ (যেখানে প্রযোজ্য)
  10. রাজ্য সরকার বা প্রশাসন প্রদত্ত পারিবারিক রেজিস্টার
  11. সরকার প্রদত্ত জমি বা বাড়ির নথি (দলিল বা পর্চা)

আধার কার্ডের ভূমিকা

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, যাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, তারা আধার কার্ডকে পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এটি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, শুধুমাত্র পরিচয়ের জন্য ব্যবহারযোগ্য।

 আগের ভোটার তালিকা অনুযায়ী ছাড়

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিহারের ভোটার তালিকায় যাদের নাম ছিল, তাঁদের নতুন নথি জমা দিতে হবে না।
একই নিয়ম অনুসারে, বাংলায় যেহেতু ২০০২ সালে শেষবার SIR হয়েছিল, তাই বাংলায়ও ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে প্রামাণ্য ধরা হতে পারে।

অর্থাৎ,

  • ২০০২ সালের পর যাদের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে, তাঁদের নথি দিতে হবে।
  • যদি অভিভাবকের নাম ২০০২ সালের তালিকায় থাকে, তাহলে তাঁদের নথি দেখালেই চলবে।
  • না থাকলে আবেদনকারীর সঙ্গে অভিভাবকের প্রমাণপত্রও দিতে হতে পারে।

 কমিশনের উদ্দেশ্য

নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়,

“আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সঠিকতা বজায় রাখতে হবে।”

Related posts

বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ, কলকাতা সহ দক্ষিণের জেলার মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টি, কত দিন?

১ নভেম্বর থেকে শুরু নতুন মরশুমের ধান কেনা, টাকা তিনদিনের মধ্যে চাষির অ্যাকাউন্টে, নির্দেশ খাদ্য দফতরের

কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী! বালাসন নদীর উপর মিরিকের দুধিয়ায় অস্থায়ী সেতু তৈরি, সোমবার থেকেই চলাচল শুরু