উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বড়সড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এবং পরীক্ষায় সময়ের সঙ্কট দূর করতে তৃতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষায় পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিট আগেই প্রশ্নপত্র ও ওএমআর শিট বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সংসদের তরফে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বিকাশ ভবনে, এবং চূড়ান্ত অনুমতির অপেক্ষা চলছে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষায় বহু ছাত্রছাত্রী অভিযোগ করেন, বিশেষ করে হিসাবশাস্ত্র, রসায়ন ও অঙ্ক পরীক্ষায় প্রশ্নের পরিমাণ ও সময়ের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় তাঁরা সমস্যায় পড়েছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সংসদ পরীক্ষাগুলিতে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা করে। তার ফলস্বরূপ তৃতীয় সেমিস্টারের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় ১০ মিনিট অতিরিক্ত প্রস্তুতির সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চতুর্থ তথা চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে। এই সেমিস্টারে পরীক্ষার্থীদের বর্ণনামূলক প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার আসল সময়ের আগে, অর্থাৎ সকাল ৯:৫০ মিনিটেই প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে যাবেন, যাতে প্রশ্ন পড়ে পরিকল্পনা করে উত্তর লেখার যথেষ্ট সুযোগ পান।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময় নষ্ট না করেই যাতে ছাত্রছাত্রীরা উত্তর লেখা শুরু করতে পারে, তাই ১০ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে।”
নিয়ম অনুযায়ী, যেদিন চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা হবে, সেদিনই দ্বিতীয় ভাগে হবে তৃতীয় সেমিস্টারের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা। এটি অনুষ্ঠিত হবে ওএমআর শিটে, দুপুর ১টা থেকে ২:১৫ পর্যন্ত। এখানেও পরীক্ষার্থীরা ১২:৫০ মিনিটেই ওএমআর শিট হাতে পাবেন।
সংসদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে—
- পরীক্ষার আসল সময়সীমায় কোনও পরিবর্তন নেই।
- তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা: ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
- চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষা: ২ ঘণ্টা।
- পুরনো পরীক্ষার্থীদের জন্য কোনও নিয়ম পরিবর্তন হচ্ছে না; তাঁরা আগের মতোই ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে পরীক্ষা দেবেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই রদবদল শিক্ষার্থীদের চাপ কমাতে সাহায্য করবে কি না, তা নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে শিক্ষা মহলে। পরীক্ষার নতুন ব্যবস্থাগুলি কার্যকর হবে কিনা, তা নির্ভর করছে বিকাশ ভবনের চূড়ান্ত অনুমতির উপর।