কলকাতা: দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ দফতরের সচিব শান্তনু বসু এবং সেচ দপ্তরের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার। রাজ্য সরকার ডিভিসির কমিটি থেকে প্রতিনিধিদের তুলে নিচ্ছে, যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চিঠিতে জল ছাড়ার বিষয়ে রাজ্যের ভূমিকা ও কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ডিভিসির জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটির মাধ্যমে মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধ পরিচালিত হয়, তবে এই কমিটিতে রাজ্যের প্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ব ভূমিকা নেই। মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় জল কমিশন এবং জল শক্তি মন্ত্রকই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়, যা অনেক সময় রাজ্যকে না জানিয়েই কার্যকর করা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ডিভিসি মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার নোটিসে জল ছেড়েছে, যা রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের জন্য পর্যাপ্ত সময় ছিল না।
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার প্রয়োজন ছিল না এবং এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যে দাবি করেছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সব রকম চেষ্টা করা হয়েছিল, তা পুরোপুরি ঠিক নয়। জলাধার নিয়ন্ত্রণকারীরা সঠিকভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেননি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও অভিযোগ করেন, মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধে সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা এখনও সম্পূর্ণ হয়নি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। এই সমস্ত কারণেই রাজ্য সরকার ডিভিসির কমিটি থেকে নিজের প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই পদক্ষেপ রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে জলাধার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিনের মতপার্থক্যেরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।