রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগের হাওয়া জোরদার হচ্ছে। শিল্পপতিরা ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ঠিক সেই সময়েই বছরের শেষের বাণিজ্য সম্মেলনের আগে রাজ্য মন্ত্রিসভা ঝাড়গ্রামে শিল্প বিনিয়োগের লক্ষ্যে একটি বড় পদক্ষেপ নিল। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঝাড়গ্রামের সুখনিবাস ও খাগড়াশোল মৌজায় অবস্থিত ১৪৯.৬৪ একর ইন্ডাস্ট্রিয়াল জমি, যা এতদিন WBIDC-এর অধীনে ছিল, তা ক্যাপ্টেন ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং আল্ট্রা টেক কোম্পানিকে ফ্রি হোল্ড গাইডলাইন অনুযায়ী বরাদ্দ করা হচ্ছে।
রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “ঝাড়গ্রামে শিল্প বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করতে আজ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উভয় সংস্থাই বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং সমস্ত নিয়ম মেনে আবেদন করেছে। এর ফলে স্থানীয় এলাকায় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”
শিল্প বিনিয়োগের পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাংস্কৃতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বছর ‘বন্দে মাতরম্’ রচনার ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজ্যজুড়ে উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এই উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি সেলিব্রেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, ভাইস-চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং মুখ্য উপদেষ্টা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন আবুল বাশার, গৌতম ঘোষ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ ভৌমিক, সুবোধ সরকার, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শুভাপ্রসন্ন, সত্যম রায় চৌধুরী, দেব, সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্ব মজুমদার ও দেবাশিস ভট্টাচার্য।
মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “জাতীয় গীত রচনার ১৫০ বছর পূর্তি আমরা রাজ্যজুড়ে উৎসবের মাধ্যমে পালন করব। জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় গীতের ঐতিহাসিক গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি ভারত সরকার ‘জন গণ মন’ কে জাতীয় সঙ্গীত ও ‘বন্দে মাতরম্’ কে জাতীয় গীত হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী জেলায় জেলায় থেকে মন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন। মোট ১৩ জন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন, এবং বৈঠকে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়।রাজ্যের শিল্প ও সংস্কৃতিকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই দ্বৈত উদ্যোগে সরকারের উন্নয়ন ও ঐতিহ্য রক্ষার বার্তা আরও জোরালো হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।