রাত পোহালেই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার এই তালিকা প্রকাশিত হবে বলে কমিশন সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। ভোটার তালিকা ঘিরে মানুষের মধ্যে যেমন কৌতূহল রয়েছে, তেমনই রয়েছে একাধিক প্রশ্ন ও আতঙ্ক। বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়তে পারে—এই আশঙ্কা থেকেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছেই পাঠানো হবে। তবে আপাতত বিডিও কিংবা এসডিও অফিসে ছাপানো তালিকা পাওয়া যাবে না। কারণ, স্বল্প সময়ের মধ্যে এত বিপুল সংখ্যক তালিকা ছাপানো সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে কমিশন। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে ভোটারদের তালিকা দেখার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না বলেই দাবি কমিশনের। খসড়া তালিকা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ও অ্যাপে দেখা যাবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-দের কাছেও খসড়া তালিকা থাকবে। এছাড়া জেলা শাসক বা ডিএম-দের কাছেও তালিকা সংরক্ষিত থাকবে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, গত ২৭ অক্টোবর বাংলায় এসআইআর (Special Intensive Revision) ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এই প্রক্রিয়া। কমিশনের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ৫৭ লক্ষের বেশি ভোটারের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। এই তালিকায় মূলত মৃত ভোটার, স্থানান্তরিত ভোটার এবং ডুপ্লিকেট নাম রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই সম্ভাব্য বাদ পড়ার বিষয়টি নিয়েই ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যদিও কমিশনের দাবি, অযথা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।
কমিশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার জেলার প্রত্যেকটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে ছাপানো তালিকা তুলে দেওয়া হবে। শহর ও শহরতলির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা থাকবে। তবে কাগজে নয়, হার্ডডিস্ক বা পেন ড্রাইভের মাধ্যমে এই তালিকা সরবরাহ করা হবে।
খসড়া তালিকা প্রকাশের পরেই আপত্তি ও দাবির শুনানি শুরু হওয়ার কথা। যদিও সেই শুনানি শুরু হতে এখনও পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কোথায় এবং কীভাবে এই শুনানি হবে, সে বিষয়ে এখনও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা আসেনি। সেই নির্দেশিকা এলেই শুনানির প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
সব মিলিয়ে, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের দিকে তাকিয়ে রাজ্যজুড়ে এখন কৌতূহল ও উৎকণ্ঠা—দুটোই চরমে।