প্রথম পাতা খবর পশ্চিমবঙ্গে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে কত নাম বাদ পড়তে পারে? বিজেপির ‘১ কোটির বেশি’র দাবি কি মিলতে চলেছে?

পশ্চিমবঙ্গে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে কত নাম বাদ পড়তে পারে? বিজেপির ‘১ কোটির বেশি’র দাবি কি মিলতে চলেছে?

13 views
A+A-
Reset

পশ্চিমবঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার সংখ্যা আরও বেড়ে পৌঁছাল ৫৮,০৮,২০২–এ। বৃহস্পতিবার এনুমারেশন পর্ব শেষ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মৃত, নিখোঁজ, স্থানান্তরিত এবং ‘ভুয়ো’ চিহ্নিত মিলিয়ে এতজন ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে। খসড়া তালিকা প্রকাশের সময় এই সংখ্যায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে, তবে তা খুব বেশি নয় বলেই কমিশন মনে করছে। বর্তমান হিসাবে রাজ্যে মৃত ভোটারের সংখ্যা ২৪,১৮,৬৯৯। নিখোঁজ তালিকায় রয়েছেন ১২,০১,৪৬২ জন। নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনও বুথ স্তরের আধিকারিক (BLO) কোনও ভোটারের বাড়িতে তিনবার বা তারও বেশি যান এবং তবুও তাঁর খোঁজ না মেলে, তা হলে তাঁকে নিখোঁজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ ছাড়া ১৯,৯৩,০৮৭ জন ভোটার একাধিক ঠিকানায় তালিকাভুক্ত ছিলেন। তাঁদের ঠিকানা মিলিয়ে একটি তালিকায় রেখে বাকিদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। কমিশন আরও জানিয়েছে, ১,৩৭,৫৭৫ জন ভোটারকে ‘ভুয়ো’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের নামও বাদ পড়বে খসড়া তালিকা থেকে। আরও ৫৭,৫০৯ জনকে রাখা হয়েছে ‘অন্যান্য’ বিভাগে, যাঁরাও বাদ পড়বেন।

রাজ্যে ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে খসড়া ভোটার তালিকা। যাঁদের নাম বাদ পড়েছে বা কোনও ত্রুটি রয়েছে, তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারবেন। কমিশন সেই সব অভিযোগ শুনে, তথ্য-প্রমাণ যাচাই করে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এ বছর ভোটারদের তিনটি পৃথক তালিকায় ভাগ করে যাচাই করা হচ্ছে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁরা ‘নিজস্ব ম্যাপিং’ তালিকায়—সংখ্যা ২,৯৩,৬৯,১৮৮। যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না থাকলেও বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের নাম ছিল, তাঁরা ‘প্রজিনি ম্যাপিং’ তালিকায়—সংখ্যা ৩,৮৪,৫৫,৯৩৯। তৃতীয় তালিকা ‘নন-ম্যাপিং’, যেখানে রয়েছেন প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার—যাঁদের নিজেদের বা নিকটাত্মীয় কারও নামও ২০০২ সালের তালিকায় ছিল না। এই তৃতীয় তালিকার সকলকে শুনানিতে ডাকা হবে এবং তাঁদের নথি যাচাইয়ের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাঁরা চূড়ান্ত তালিকায় থাকবেন কি না। প্রথম দুই তালিকার ক্ষেত্রেও তথ্য নিয়ে সন্দেহ থাকলে সংশ্লিষ্ট ভোটারকেও শুনানিতে ডাকা হতে পারে।

গত ৪ নভেম্বর থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শুরু হয়েছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার সাতটি রাজ্যের জন্য সময়সীমা বাড়ালেও পশ্চিমবঙ্গের সময়সীমা আর বাড়ানো হয়নি। পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী রাজ্যে এনুমারেশন পর্ব বৃহস্পতিবারই শেষ হয়েছে। পরিসংখ্যান ক্রমশ স্পষ্ট হওয়ায় ভোটের আগে এত বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ ও বিতর্ক শুরু হয়েছে।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.