পর পর তিন দিন ধরে ১৫ ডিগ্রির ঘরে স্থির রয়েছে কলকাতার পারদ। মঙ্গলবার ভোরেও শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ডিসেম্বরের শুরুতেই এই ধারাবাহিক ঠান্ডা শহরবাসীর শীতের অনুভবকে আরও স্পষ্ট করেছে। শুধু কলকাতা নয়, সমগ্র দক্ষিণবঙ্গেই একাধিক জেলায় তাপমাত্রা দ্রুত নেমেছে। মঙ্গলবার ভোরে কল্যাণীতে নথিভুক্ত হয়েছে ১১.৫ ডিগ্রি, বর্ধমানে ১১.৮, শ্রীনিকেতনে ১১.৬ এবং বাঁকুড়ায় ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় সকালের দিকে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশাও ছড়িয়েছে।
এদিকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে শীতের দাপট আরও স্পষ্ট। দার্জিলিঙে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সমতলেও পারদ স্বাভাবিকের তুলনায় যথেষ্ট কম। কোচবিহারে রেকর্ড হয়েছে ১০.৬ ডিগ্রি, কালিম্পঙে ১০ ডিগ্রি, আলিপুরদুয়ারে ১১ ডিগ্রি এবং জলপাইগুড়িতে ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাহাড় ও কোচবিহার–জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভোরের দিকে কুয়াশার দাপট বাড়ছে। কোথাও কোথাও দৃশ্যমানতা নেমে আসছে ৯৯৯ মিটার থেকে ২০০ মিটার পর্যন্ত।
নভেম্বরের শেষে একাধিক নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা ও বাতাসের গতিবিধিতে পরিবর্তন ঘটে সাময়িক ভাবে উষ্ণতা ফিরেছিল। তবে বর্তমানে সমুদ্রে নতুন কোনও নিম্নচাপ অঞ্চল বা ঘূর্ণাবর্ত নেই। ফলে পশ্চিমবঙ্গে এখন উত্তুরে হাওয়া অবাধে প্রবেশ করছে এবং এই হিমেল হাওয়াই তাপমাত্রা কমিয়ে দিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত রাজ্যে তাপমাত্রায় বড় ধরনের ওঠাপড়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টি নেই বললেই চলে। তবে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় কুয়াশা বাড়তে পারে। পাশাপাশি সপ্তাহের শেষ দিকে আবারও এক দফা পারদপতনের ইঙ্গিত রয়েছে।
শহর থেকে পাহাড়, সমগ্র রাজ্যে এখন প্রকৃত শীতের আমেজ। সকালের কুয়াশা, ঠান্ডা হাওয়া এবং ক্রমে কমে আসা তাপমাত্রা শীতপ্রেমীদের মন ভরালেও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় তার প্রভাব স্পষ্ট হচ্ছে।