ডেস্ক: মঙ্গলবার বিকাশ ভবন চত্বরে প্রকাশ্যে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন ৪ শিক্ষিকা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, অনৈতিকভাবে দূরে বদলি করা হচ্ছে শিক্ষিকাদের। এছাড়া একাধিক দাবিও ছিল তাঁদের। এই প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’ বুধবার ফেসবুকে মন্ত্রী তুলে ধরলেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য রাজ্য সরকার কী কী করেছে শেষ কয়েক বছরে। বিঁধলেন আন্দোলনকারীদের।
বুধবার শিক্ষামন্ত্রী মুখ খোলেন, বাম সরকারকে তোপ দাগেন। ব্রাত্য বলেন, ‘বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে এসএসকে এবং এমএসকের সহায়ক/সহায়িকা, সাম্প্রসারক/সম্প্রসারিকারা নামমাত্র সাম্মানিকের বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগসুবিধা বলে কিছু ছিল না।’ সেইসঙ্গে তৃণমূল সরকারের আমলে এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষকদের জন্য কী কী সুবিধা প্রদান করা হয়েছে, তা তুলে ধরেন ব্রাত্য।
সহায়ক-সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০,৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক-সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩,৩৯০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও বাৎসরিক ৩%বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে বিশেষ ১০৯ জন অফিসার
প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে। যাঁরা ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তাঁদের অবসরের সময়ে প্রত্যেকের জন্য ৩ লক্ষ টাকা এককালীন অবসরভাতা চালু করা হয়েছে। বাকিদের জন্যও এই সুবিধা দানের বিষয়ে অর্থদপ্তরের সঙ্গে ফাইল চলছে।
৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের জন্য ১/২/২১ থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে। মহিলাদের জন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেককের জন্য চিকিৎসা-সংক্রান্ত সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ বা ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে।’
ব্রাত্যের বক্তব্য, সেই সুযোগ-সুবিধা চালুর পরও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা মোটেও প্রকৃত শিক্ষক নন। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘তারপরেও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’
শিক্ষক-শিক্ষিকারা দাবি করেন, শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে একাধিক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। নবান্নের সামনে গিয়েছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছিলেন। আন্দোলনের ‘শাস্তি’ হিসেবে তাঁদের ‘হোম ডিস্ট্রিক্ট’ থেকে বহু দূরে বদলি করা হয়েছে। ‘বিষ’ পানের জেরে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। আপাতত তিনজন আরজি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং দু’জন নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি আছেন। তিনজনকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।