বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষে তৃতীয়া তিথিতে উদ্যাপিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া। এটি হিন্দু এবং জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি শুভ দিন হিসাবে বিবেচিত হয়। আগামী ২২ এপ্রিল (শনিবার) সকাল ৭টা ৪৯ মিনিট নাগাদ শুরু হবে অক্ষয় তৃতীয়ার তিথি। ২৩ এপ্রিল (রবিবার) সকাল ৭টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। এই সময়কালের মধ্যে রয়েছে পুজো করার শুভক্ষণ।
অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো করার শুভসময় শনিবার সকাল ৭টা ৪৯ মিনিট থেকে বেলা ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত। বিষ্ণু পুজো করলে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন এমন ফল লাভ হয়, যার কোনো ক্ষয় হয় না। এই সময়কালে কেনাকাটা ও দানধ্যানে আসে পূণ্য। এ দিন জল, কলসি, চিনি, ছাতু, পাখা, ছাতা, ফল ইত্যাদি দান করতে পারেন। এই দ্রব্যগুলি দান করলে পরিবারে লক্ষ্মী বিরাজ করবেন। এর ফলে আপনাদের সমস্ত আর্থিক কষ্ট দূর হবে। পাশাপাশি দান করলে লক্ষ্মীও প্রসন্ন হন। লক্ষ্মীর আশীর্বাদে পরিবারে কখনও ধন বৈভবে অভাব থাকে না। এই তিথিতে গণেশের আরাধনাও করা হয়।
তৃতীয় বলতে তৃতীয় চন্দ্র দিনকে বোঝায়, অন্যদিকে অক্ষয় এমন কিছুকে বোঝায় যা অমর বা অবিনশ্বর। সুতরাং, অক্ষয় তৃতীয়ায় আমরা যা কিছু করি তা চিরকাল স্থায়ী এবং অক্ষয় হয়। অনেকেরই বিশ্বাস, অক্ষয় তৃতীয়া সাফল্য এবং সৌভাগ্য নিয়ে আসে। এমন দিনে সোনা কেনার রীতিও রয়েছে প্রচলিত। এই দিনে শুভ কাজগুলি শুরু করলে, যেমন বাড়ি, সম্পত্তি বা গয়না কেনা ইত্যাদি চিরকাল স্থায়ী হবে এবং আপনার ভাগ্য নিয়ে আসবে।
মহাভারতে পাণ্ডবরা বনবাসে থাকার সময় কৌরবদের চক্রান্তে মুনি দুর্বাসা তাঁর শিষ্যদের নিয়ে এক রাতে হঠাত্ই পাণ্ডবদের আশ্রয় গ্রহণ করতে আসেন। সেই সময় পাণ্ডবদের ঘরে কোনো অন্ন ছিল না। ক্ষুধার্ত দুর্বাসা অন্ন দিতে না পারলে তিনি যে প্রচণ্ড অভিশাপ দেবেন তা ভেবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পাঁচ ভাই ও দ্রৌপদী। সেই সময় কৃষ্ণ এসে হাঁড়ির তলায় লেগে থাকা একটিমাত্র চালের দানা খেয়ে নেন। আর তাতেই পেট ভরে যায় দুর্বাসা ও তাঁর শিষ্যদের। দুর্বাসার ক্রোধ থেকে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনই পাণ্ডবদের রক্ষা করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
এ ছাড়াও বলা হয় অক্ষয় তৃতীয়াতেই নাকি রাজা ভগীরথ দেবী গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। এ দিনই না কি কুবেরের লক্ষ্মীলাভ হয়েছিল। তাই এ দিনে ধন-লক্ষ্মীর পুজো করা হয়।